ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির পীর সাহেব চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, দেশে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রসংস্কার ও গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার সম্পন্ন হওয়ার পরই সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন হতে হবে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঝিনাইদহ জেলা শাখা আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যারা এর আগে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে, তারা পরীক্ষিত। তারা আবার ক্ষমতায় গেলে নতুন করে কী ধরনের রাষ্ট্র আমাদের উপহার দেবে, তা বুঝতে আর বাকি নেই। নিজেদের মধ্যে চাঁদার ভাগ নিয়ে মারামারি, এমনকি খুনাখুনি করেছে। পাথর দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ দেশের সব ইসলামী দল এক কাতারে এসেছে। দেশপ্রেমিক অনেক মানুষ আছেন, যারা পরিবর্তন চান।’ এ সময় তিনি ঝিনাইদহ-৩ আসনে মাওলানা সরোয়ার হোসেন এবং ঝিনাইদহ-৪ আসনে মুফতি মুহাম্মদ আব্দুল জলিলকে দলের প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন।
গণসমাবেশের মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রসংস্কার, গণহত্যার বিচার, পিআর পদ্ধতিতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং দেশ ও ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের প্রতিবাদ।
চরমোনাই পীর বলেন, ‘বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। সেই সঙ্গে টাকা পাচারকারী, খুনি, গুমকারী, জালিম, বদমায়েশ এবং গণহত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলা শাখার সভাপতি এবং ঝিনাইদহ-২ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী ডা. এইচ এম মোমতাজুল করীম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা আব্দুল আওয়াল, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, শিল্প ও বাণিজ্য সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শোইব হোসেন, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি মোস্তফা কামাল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মুফতি আহমাদ আব্দুল জলিল।
সমাবেশের উদ্বোধনী বক্তব্য দেন মাস্টার শরিফুল ইসলাম। এছাড়াও স্থানীয় নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাওলানা শিহাব উদ্দিন, মুফতি মোহাম্মদ রাসেল উদ্দিন, মুফতি মোহাম্মদ আলী হুসাইন, মাওলানা হাসানুর রহমান এজাজী, মাওলানা কামাল উদ্দিন আল মাহমুদ, প্রভাষক আশরাফ আলী ফারুকী, মাওলানা এনামুল হক ফয়েজি, মুফতি মনিরুল ইসলাম, মাওলানা রুহুল আমিন খান, আলহাজ রায়হান উদ্দিন, আবু বকর সিদ্দিকী, মাওলানা নিজাম উদ্দিন মুন্সি, সাইফুর রহমান বাদল, মাওলানা গাজী ইয়াসিন আলী, ফারুক হোসেন, মুফতি মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, এইচএম নাঈম মাহমুদ, ইসমাইল হোসেন রাহাত প্রমুখ।
আহ্বায়ক দলের সমাবেশে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমীর অধ্যাপক আলী আজম মো. আবু বকর, জামায়াতে ইসলামীর জেলা সেক্রেটারি আব্দুল আওয়াল এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের আমীর মাওলানা মিজানুর রহমানসহ অন্যান্য নেতা।
সমাবেশ শুরুর পরই প্রচণ্ড বৃষ্টি শুরু হয়। তবু বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে নেতা-কর্মীরা ভিজে ভিজেই অংশগ্রহণ করেন এবং শেষ পর্যন্ত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। আসরের নামাজের পর পীর সাহেব চরমোনাই সমাবেশে উপস্থিত হন। তখনও বৃষ্টি অব্যাহত ছিল।
এসএন