নতুন আইন অনুযায়ী আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে পারবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অর্থাৎ আগামী মাসেই নয় বরং তফসিল ঘোষণার আগ মুহূর্তে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, এ বছরে আমরা মার্চের ২ তারিখ একটি তালিকা প্রকাশ করেছি। এটা স্বাভাবিক নিয়মে করা হয়েছে। এরপর আমরা বাদ পড়াদের অন্তর্ভুক্ত করতে আবার হালনাগাদের কাজ করি। যেটার তালিকা আগামী সপ্তাহে প্রকাশ করা হবে। আগামী সপ্তাহে যেটা করা হবে, সেখানে যাদের বয়স ২০২৫ সালের জানুয়ারির ১ তারিখ বা তার পূর্বে ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
সচিব বলেন, ভোটার তালিকার আইন সংশোধন করায় জাতীয় নির্বাচনের তফসিলের আগে আমরা আরও একটা তালিকা প্রকাশ করবো। অর্থাৎ এ বছর তিনটি তালিকা প্রকাশ হচ্ছে। তফসিল ঘোষণার একমাস আগে পর্যন্ত যারা ভোটারযোগ্য হবেন তাদের নিয়ে আমরা আরেকটা তালিকা প্রকাশ করবো। এখন সিডিউল কবে ঘোষণা হবে বা নির্বাচনের তারিখটা কবে হবে এটা না জেনে চূড়ান্ত তালিকা করা যাবে না। আইনের সংশোধনের সুবিধাটা হচ্ছে, নির্বাচনের তারিখ ঠিক হলে তফসিলের আগে আমরা চূড়ান্ত তালিকা করতে পারবো। তবে তৃতীয় তালিকা নির্বাচনের সময়সীমার ওপর নির্ভর করবে। নির্বাচন যখন হবে তার আগে হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে গত ২৪ জুলাই রাতে ভোটার তালিকা আইন সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ভোটার তালিকা আইন-২০০৯ সংশোধন করে ভোটার তালিকা অধ্যাদেশ ২০২৫ করা হয়েছে। নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী এখন আর ২ মার্চ নয়, নির্বাচন কমিশন (ইসি) চাইলে বছরের যেকোনো সময় তফসিলের আগ পর্যন্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে পারবে।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯ এর ধারা ৩ এর দফায় (জ) উল্লিখিত ‘জানুয়ারি মাসের পহেলা তারিখ’ শব্দগুলোর পর ‘বা কমিশন কর্তৃক ঘোষিত অন্য কোনো তারিখ’ শব্দগুলো সন্নিবেশিত হবে।
আগের বিধান অনুযায়ী, পহেলা জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়, নির্বাচন এরপর যখনই অনুষ্ঠিত হোক পয়লা জানুয়ারির পরে যারা ১৮ বছর পূর্ণ করেন, তারা আর ভোটার তালিকায় যুক্ত হতে পারেন না। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচন। ওই নির্বাচনের ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছিল ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি যাদের ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছিল তাদের নিয়ে। অর্থাৎ মাঝখানের এক বছর যারা ১৮ বছর পূর্ণ করেছিলেন, তারা ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি। কিন্তু অধ্যাদেশে বলা হল কমিশন অন্য কোনো তারিখ পর্যন্ত এখন নিতে পারবে। তার অর্থ জানুয়ারির ১ তারিখের পরে কমিশন যে সময় নির্ধারণ করবে সে সময় পর্যন্ত যোগ্য হওয়া নাগরিকদের ভোটার তালিকায় যুক্ত করা যাবে।
অধ্যাদেশে আরও বলা হয়েছে, ভোটার তালিকা প্রতি বছর ২ জানুয়ারি থেকে ২ মার্চ পর্যন্ত বা তফসিল ঘোষণার আগে ধারা ৩ এর দফা (জ) এর অধীন ঘোষিত সময়কালের মধ্যে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে হালনাগাদ করা হবে। কিন্তু আগের বিধান অনুযায়ী, ২ মার্চের আগে পরে হালনাগাদ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা যেত না। আইনে সংশোধনের ফলে কমিশন যেকোনো সময় হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে পারবে।
এফপি/এসএন