সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের বর্ষপূর্তি হতে চলেছে। অর্থাৎ তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করার বা ক্ষমতা লাভ করার পর ১২টি মাস চলে গেছে। এই ১২টি মাসে তিনি যে কথাগুলো বলেছেন, যে আশ্বাসগুলো দিয়েছেন এবং তার সরকারের কর্মকাণ্ডের যে বৃত্ত তিনি আঁকার চেষ্টা করেছেন, তা জনগণের মধ্যে সাড়া ফেলতে পারেনি। তার সম্পর্কে মানুষের যে বিশ্বাস ছিল, ভালোবাসা ছিল, আগ্রহ ছিল তা এখন রিভার্স হয়ে গেছে।
মানে একেবারে উল্টো হয়ে গেছে। যেটা ইতিবাচক ছিল সেটা নেতিবাচক হয়ে গেছে। আর যেটা অকল্পনীয় ছিল সেটা বাস্তব হয়ে গেছে। ফলে কী হলো? তিনি যা কিছু বলছেন বা তার পক্ষ থেকে যা কিছু বলা হচ্ছে, এটা এখন আমাদের এই দেশে বিশ্বাস করার মতো লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন গোলাম মাওলা রনি।
গোলাম মাওলা রনি বলেন, তার (ড. ইউনূস) সাথে যারা আছেন, তারা কেউ কি তার পরামর্শদাতা? কেউ কি তার বন্ধু? বা এই সরকারের কোনো একজন ব্যক্তি যার সঙ্গে তিনি ঘন ঘন বৈঠক করেন, তার পরামর্শ নেন। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কথায় কোনো একজন উপদেষ্টা তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন বা উপদেষ্টার কথায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন, এ রকম কোনো নজির আমরা দেখতে পাইনি।
তিনি বলেন, সরকারের যারা প্রভাবশালী কয়েকজন উপদেষ্টা রয়েছেন। এরা মূলত প্রভাবশালী হয়েছেন মিডিয়াতে এসে কথা বলার কারণে। তাদের মন্ত্রণালয় তাদের যে আউটপুট বলতে গেলে শূন্য। অনেক ক্ষেত্রে নেতিবাচক এবং তারা সরকারের জন্য দেশের জন্য অনেক আপদ-বিপদ ডেকে নিয়ে এসেছেন অতিকথনের ফলে। তো তারা সে অতিকথনের কারণে আমরা মনে করি তারা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তাদের কারো সঙ্গে ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে।
ড. ইউনূস তাদের বিশ্বাস করেন, রিলাই করেন। কিংবা তারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে রিপ্রেজেন্ট করেন। আমার কাছে সেটা মনে হয়নি। উল্টো আমার কাছে যেটা মনে হয় যে তারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে তেল-মালিশ করতে চান। তেল দিতে চান। তার কথার সঙ্গে কমপ্লাই করতেছেন এবং আন্দাজে ড. ইউনূস একটা কথা বলেন। তো সেই কথার ওপর তারা অন্ধভাবে বলে, হ্যাঁ। স্যার যেহেতু বলেছে, উনি যেহেতু বলেছেন, এটাই হবে এবং উনার মতো মানুষ ও বিশ্বমানবের বাইরে তিনিও যাবেন না। তার প্রতি রিলাই করতে পারেন। আমরা জানি, তিনি খুব ভালো মানুষ। ইত্যাদি কথাবার্তা।
তিনি আরো বলেন, এগুলো পুরোটাই অনেকটা ইলুয়েশনের মতো। এখন এই কথাগুলো বলার জন্য আসলে উপদেষ্টা হওয়ার দরকার নাই। যেকোনো লোক এই কথাগুলো বলতে পারে।
কিন্তু তারা যদি অথরিটি নিয়ে বলতেন যে আমার সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার কথা হয়েছে এবং আমি অনবিহাফ প্রধান উপদেষ্টা। আমি আপনাদের গ্যারান্টি দিচ্ছি, এটা হবে। যদি না হয় আমি পদত্যাগ করব। এটাকে বলা হয় অথরিটি। এই অথরিটি আমি কাউকে দেখিনি আজ পর্যন্ত এই সরকারের। এখানে সরকারের প্রেষণ আছে। সরকারি উপদেষ্টামণ্ডলী রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ কতগুলো সহকারী রয়েছেন। তারা তাদের দপ্তরে বসে কিছু কাজকর্ম করছেন। আর প্রধান উপদেষ্টার মন-মানসিকতা, আকাশের গ্রহ-নক্ষত্র, আবহাওয়া-প্রকৃতি এগুলো আন্দাজ করে তারা কিছু কথাবার্তা বলার চেষ্টা করছেন।
এমকে/টিএ