বরগুনার আমতলী উপজেলায় গণ অভ্যুত্থানের বর্ষপূতি ৩৬ জুলাইয়ের সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচি শেষে বাড়ি ফেরার পথে বাস চাপায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এক নেতার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা ঘাতক বাসটির চালক, হেল্পার এবং সুপারভাইজারকে আটকের দাবিতে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।
ঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে ঢাকা কুয়াকাটা মহাসড়কের আমতলী উপজেলার ঘটখালী নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নেতার নাম মাওলানা মোহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়াও তিনি আমতলী বন্দর হোসাইনিয়া কামিল মাদ্রাসার একজন আইসিটি বিষয়ক প্রভাষক ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূতি ৩৬ জুলাই উপলক্ষে বিকেলে আমতলী পৌরসভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং জামায়াতে ইসলামীর একটি সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে মিছিল শেষে মোটরসাইকেলে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন রেজাউল করিম। এ সময় ঢাকা কুয়াকাটা মহাসড়কের আমতলী উপজেলার ঘটখালী নামক এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে বরিশাল থেকে ছেড়ে আসা কুয়াকাটাগামী ছন্দা পরিবহন নামে একটি যাত্রীবাহী বাস ওই মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে রেজাউল করিম সড়কে ছিটকে পড়ে বাসের চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরন করেন। এছাড়াও তার সঙ্গে থাকা আব্দুল হক মল্লিক নামে আরেকজন সড়কে ছিটকে পরে আহত হন। পরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘাতক ওই বাসটিসহ চালক এবং হেল্পারকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ঢাকা কুয়াকাটা সড়ক অবরোধ করে রাখেন ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। পুলিশ বাসচালকসহ বাসটিকে আটক করলে রাত নয়টার দিকে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করেন তারা।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আমতলী উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা ওমর ফারুক বলেন, মিছিল শেষে রেজাউল করিম বাড়িতে ফিরতে গিয়ে সড়কে বাসের চাপায় মর্মান্তিকভাবে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আটকের দাবিতে নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন। পরে আটকের খবর পেয়ে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়েছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরগুনা জেলা শাখার সভাপতি মুফতি মিজানুর রহমান কাসেমী বলেন, মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আমতলীর গুলিশাখালী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রেজাউল করিম নিহত হয়েছেন। বাসচালকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তারের খবরে সড়ক অবরোধ সাময়িকভাবে তুলে নেয়া হয়েছে। বাস এবং আটককৃতদের বিচারের আওতায় আনতে দ্রুত আমতলী থানায় নিয়ে আসতে হবে। বাসের মালিককেও আসতে হবে। এবং এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তা না হলে প্রয়োজনে আবারও সড়ক অবরোধ করা হবে।
এ বিষয়ে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার খবর পেয়েই দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরবর্তীতে ঘাতক বাসটিকে আটক করতে মহিপুর এবং কালপাড়া থানা পুলিশকে অবহিত করলে মহিপুর থানা পুলিশ বাসটিসহ চালক, সুপারভাইজার এবং হেল্পারকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
এফপি/ টিএ