২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার প্রথমদিন বাংলা প্রথমপত্রে সময়মতো কেন্দ্রে না আসায় পরীক্ষা দিতে না পারা আনিসা আহমেদকে বিশেষ শর্তে পাসের সুযোগ দিলেও পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা দুটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন যাচাই করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আনিসা দাবি করেছিলেন অসুস্থ মাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য দেরি হয়েছে, তাই কেন্দ্রে পরীক্ষার সময়ে উপস্থিত হতে পারেননি। সেই দৃশ্যের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক সমালোচনা ও সহানুভূতির সৃষ্টি হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা বোর্ডও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। তবে তদন্তের মাধ্যমে আনিসার দেওয়া তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি। হাসপাতালের ভর্তি স্লিপসহ প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই করেও সত্যতা নিশ্চিত না হওয়ায় আনিসাকে বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষায় বসানোর সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। তবে বোর্ডের শর্তে বাংলা দ্বিতীয়পত্রে অন্তত ৬৬ নম্বর পেলে দুই পত্রের মিলিত ফলাফলে পাস হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার জানান, আনিসার পরীক্ষার বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে তার তথ্য যাচাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সে পরীক্ষা না দিয়েও পাস করতে পারে যদি দুই পত্র মিলিয়ে ৬৬ নম্বর পায়।
এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে হাসপাতালের ভর্তি স্লিপসহ প্রমাণাদি সংগ্রহ করা হলেও তার সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি। ‘যদি কেউ ভুয়া স্লিপ এনে দেয়, তাতে আমাদের কিছু করার নেই’- যোগ করেন তিনি।
বিষয়টি নিযে আনিসা ও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার দেওয়া মোবাইল নম্বরের একটি বন্ধ, অন্যটি রিসিভ করেনি।
এর আগে ২৬ জুন বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষার দিন আনিসার কান্নার ছবি-ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। ভিডিওতে আনিসার খালা জানান, বাবা মারা গেছেন, মা স্ট্রোকের কারণে অসুস্থ, তাই আনিসা মাকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার কারণে পরীক্ষায় দেরি হয়েছে। এসব তথ্য যাচাই ছাড়াই নেটিজেনদের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া ও দাবি উঠেছিল তাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়ার। তবে তদন্ত শেষে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত না হওয়ায় আনিসাকে পরীক্ষায় বসানোর কোনো সিদ্ধান্ত আপাতত নাকচ করা হয়েছে।
টিকে/