বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেছেন, অনেকেই বলেন এই প্রশাসন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পূর্ণ করতে পারবে না। আমরা বলি জনগণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। জনগণ এই নির্বাচনে কারচুপি করতে দেবে না, জনগণ শুধু ভোট দেবে না, ভোট দেওয়ার পরে প্রত্যেকটা ভোটকেন্দ্র পাহারা দেবে। আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে বলব একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে আমাদের পক্ষ থেকে শতভাগ সহযোগিতা থাকবে। আমরা বিশ্বাস করি নির্বাচনে জনগণ আমাদের পাশে থাকবে। যারা নির্বাচন পেছানোর কথা বলে আমরা মনে করি তারা দেশের জন্য রাজনীতি করতে চায় না।
রোববার (১০ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে নওগাঁ জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষ্যে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের নেতা, আমাদের চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে দুর্গাপূজায় আমরা মন্দির পাহারা দিয়েছি। ১৭টা বছর আওয়ামী লীগ আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর দখল করেছে, ব্যবসা দখল করেছে, আমাদের নেতাকর্মীদের গুম করেছে, হত্যা করেছে, যে পুলিশ গুম করেছে তাদের নিরাপত্তাও আমরা দিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি নির্বাচনেও জনগণ আমাদের পাশে থাকবে। আন্দোলনকারী যে সমস্ত দল আমাদের সাথে ছিল তাদের কেও বলবো, ছাত্রদেরকেও বলবো আসুন আমরা জনগণের কাছে যাই। জনগণ কখনো ভুল করে না।
জনগণ ৬২, ৬৯, ৭০, ৭৫, ৯০ এবং ২৪শেও ভুল করেনি। কাজেই জনগণের ওপর আমাদের আস্থা রাখতে হবে। আমরা জনগণের ওপর আস্থা রেখেই নির্বাচনে যেতে চাই। আপনারাও আসেন। আমাদের নেতা দেশনায়ক তারেক রহমান বলেছেন- জনগণ যদি বিএনপিকে এককভাবে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় নিয়ে যায়, তারপরও রাষ্ট্র মেরামতের জন্য আমরা সকল দলকে সাথে নিয়ে সরকার পরিচালনা করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন শুধু বিএনপির স্বার্থের জন্য না, এটি দেশ রক্ষার নির্বাচন, স্বাধীনতা রক্ষার জন্য নির্বাচন, গণতন্ত্র রক্ষা এবং ফিরিয়ে আনার জন্য নির্বাচন। জনগণকে তো সুযোগ দিতে হবে- এই দেশ কারা পরিচালনা করবে। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের নেতা তারেক রহমান জনগণের ভোটে আগামীতে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসলে তার বাবার মতো রাষ্ট্র মেরামতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।
আব্দুস সালাম বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানাই তিনি আমাদের নেতা তারেক রহমানের সাথে বৈঠকে যে কথা দিয়েছিলেন সে কথার ওপরে এখনো অটল আছেন। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন করার জন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে বলতে চাই, আমরা সব সময় এই সরকারকে সহযোগিতা করেছি, আমরাই তাদেরকে এনেছি। আমরা প্রথম থেকে বলে এসেছি একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব অর্পিত করাটাই এই সরকারের প্রধান কাজ।
অনেকেই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য চেষ্টা করছে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলবো, আপনাদের উপদেষ্টারা যদি কোথাও এমন কোনো বক্তব্য না দেয়, বা কোনো পার্টির প্রতি তাদের দয়া না থাকে, তাহলে আমরা বিশ্বাস করি একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে এবং সেই নিরপক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তার প্রার্থীকে বিজয়ী করবে।
তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর লড়াই করেছি গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। সে সময় শেখ হাসিনা যদি আমাদের কথাগুলো শুনতো তাহলে তাকে এভাবে পালিয়ে যেতে হতো না। আর আজকে বাংলাদেশের প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানও ধ্বংস হতো না। কিন্তু সে নির্বাচনও করতে চায়নি। উপরন্ত সে নির্বাচনবিহীন ক্ষমতায় ছিল এবং আরও অনেক বছর সে ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রশাসনসহ সকল সেক্টর ধ্বংস করেছিল। কাজেই আমরা এ সরকারকে বলবো অন্য কোনো দিকে দৃষ্টি না দিয়ে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের জন্য।
নওগাঁ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক এস এম রেজাউল ইসলাম রেজুর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, বগুড়া-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেনসহ কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ইউটি/টিএ