তীব্র পানি সংকটের কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে জনশূন্য হয়ে যেতে পারে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল। আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা মার্সি কর্পসের এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আসন্ন পাঁচ বছরের মধ্যেই শহরের পানির মজুদ ফুরিয়ে যেতে পারে, যা অর্থনৈতিক পতনসহ ব্যাপক মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে।
বর্তমানে ৬০ লাখেরও বেশি মানুষের আবাস কাবুলে। হিন্দুকুশ পর্বতমালার বেষ্টিত একটি সংকীর্ণ উপত্যকায় অবস্থিত এই শহর শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে দক্ষিণ এশিয়া, মধ্য এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে কৌশলগত ও সাংস্কৃতিক সংযোগস্থল হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং মাটির নিচ থেকে অতিরিক্ত পানি উত্তোলনের কারণে গত এক দশকে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ২৫ থেকে ৩০ মিটার নিচে নেমে গেছে। শহরের প্রায় অর্ধেক বোরওয়েল বা কূপ ইতোমধ্যে শুকিয়ে গেছে।
প্রতিবছর কাবুল থেকে ৪৪ মিলিয়ন ঘনমিটারের বেশি ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করা হচ্ছে, যা প্রাকৃতিকভাবে পুনর্ভরনের তুলনায় অনেক বেশি। এর ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে কাবুল আধুনিক ইতিহাসের প্রথম “পানিশূন্য রাজধানী”তে পরিণত হতে পারে।
সংকটের কারণে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। মাত্র তিন দশক আগে কাবুলের জনসংখ্যা ছিল ২০ লাখের নিচে, কিন্তু মার্কিন নেতৃত্বাধীন দুই দশকের সামরিক আগ্রাসনের পর নিরাপত্তাহীনতা ও শাসনব্যবস্থার অবনতির ফলে গ্রামীণ অঞ্চল থেকে বিপুল মানুষ কাবুলে আশ্রয় নেয়। এখন অনেক পরিবারকে দিনে মাত্র চার থেকে পাঁচ লিটার পানিতে জীবনযাপন করতে হচ্ছে। সকাল হলেই পানির জন্য লড়াই শুরু হয় কাবুলের পথে-ঘাটে।
কেএন/এসএন