ইউরোপের দলবদলের খবরে আজকাল খুব একটা রহস্য থাকে না। ফ্যাব্রিজিও রোমানো কিংবা ডেভিড ওর্নস্টেইনের মতো সাংবাদিকরা আগেই জানিয়ে দেন, কে কোথায় যাচ্ছেন। এরপর ক্লাবের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা কেবল আগেভাগে ফাঁস হয়ে যাওয়া খবরের নিশ্চিতকরণ মাত্র।
তবে এমন এক যুগেও ‘সারপ্রাইজ’ দেওয়া সম্ভব—সেটাই দেখিয়ে দিল পর্তুগিজ ক্লাব পোর্তো।
রোমানোদের নাক গলানো এড়িয়ে একেবারে গোপনে তারা দলে ভিড়িয়েছে বড় মাপের এক খেলোয়াড়কে। যা হয়ে উঠেছে ইউরোপীয় মৌসুমের সবচেয়ে বড় চমক।
ঘটনাটা ঘটেছিল গত ৩ আগস্টে। আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে এস্তাদিও দ্রাগাওয়ে খেলার আগে স্টেডিয়ামের লাউডস্পিকারে হঠাৎ ঘোষণা এল—‘এক চমকপ্রদ সাইনিং অপেক্ষা করছে আপনাদের জন্য।’ দর্শকেরা তখন একে অপরের দিকে তাকিয়ে ভাবছেন, এমন খবর তো কোথাও শোনা যায়নি!
ঠিক তখনই মাঠে হাজির হলেন লম্বা দেহ, সোনালি চুলের এক ফুটবলার। পিঠে ২৬ নম্বর জার্সি। নাম লুক ডি ইয়ং।
লুক ডি ইয়ংকে চেনার জন্য হয়তো বার্সেলোনা সমর্থকের কাছে যেতে হবে।
লিওনেল মেসির বিদায়ের পরের কঠিন সময়ে এই ডাচ স্ট্রাইকারই ছিলেন কাতালান ক্লাবের অন্যতম ত্রাতা। মাত্র আধ মৌসুমে ২৯ ম্যাচে ৭ গোল করে সমর্থকদের মনে জায়গা করে নেন তিনি।
তাকে পোর্তোয় দলে ভেড়ানো হয় এতটাই গোপনে যে, পুরো প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন মাত্র আটজন—সভাপতি আন্দ্রে ভিয়াস বোয়াস, কোচ ফ্রান্সেস্কো ফারিওলি, আর্থিক পরিচালক, ডি ইয়ং ও তার এজেন্টসহ হাতে গোনা কয়েকজন।
এমন বড় মাপের খেলোয়াড়কে লুকিয়ে আনা সহজ ছিল না। বিমান থেকে নামার পর ডি ইয়ংকে দ্রুত কালো কাঁচের গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
মেডিকেল পরীক্ষার সময়ও পরিচয় গোপন রাখা হয়। তাকে রেজিস্টার করা হয়েছিল হ্যান্ডবল খেলোয়াড় হিসেবে!
সতীর্থদের কাছেও খবর গোপন ছিল। খেলা শুরুর আগ মুহূর্তে ড্রেসিংরুমে নতুন সঙ্গীদের সামনে হাজির হন তিনি।
ফলে মাঠে যখন ঘোষণা এল এবং ডি ইয়ং বেরিয়ে এলেন দর্শকদের সামনে, তখন এস্তাদিও দ্রাগাওয়ের ৪৯ হাজার দর্শক অবিশ্বাসে হতবাক।
পোর্তোর সভাপতি ভিয়াস বোয়াসের কথাই সত্যি হলো—‘আমরা চেয়েছিলাম সবাইকে চমকে দিতে।’
আধুনিক ফুটবলের দলবদলের যুগে এক অসম্ভব কাণ্ড দেখল বিশ্ব, যেখানে সাংবাদিকদের আগে দলবদলের সাক্ষী হয়েছেন সমর্থকেরাই।
এফপি/ টিকে