ভারতের সাবেক ক্রিকেটার রাহুল দ্রাবিড় সম্প্রতি পডকাস্টে শেয়ার করেছেন ২০১১ সালের ইংল্যান্ড সফরের একটি মুহূর্ত, যা ১৪ বছর পরও তার মনে আক্ষেপ জাগিয়ে রাখে। এজবাস্টন টেস্টে শচীন টেন্ডুলকারের পরামর্শে তিনি আউট হন, যা পরে দেখেন, আসলে বল ব্যাটে লেগে ছিল না।
২০১১ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ হেরেছিল ভারত। মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বাধীন দলটির হয়ে ওই সফরে দ্রাবিড় দারুণ পারফর্ম করেছিলেন। ৮ ইনিংসে করেন ৪৬১ রান। যা ভারতীয়দের মধ্যে সর্বোচ্চ। সেই রানটা আরও বাড়তে পারত। কিন্তু না হওয়ার পেছনে কিছুটা দায় শচীনকে দিলেন সাবেক এই ভারতীয় অধিনায়ক। সম্প্রতি বিভিন্ন বিষয়ে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের পডকাস্ট অনুষ্ঠান ‘কুট্টি স্টোরিজ’–এ কথা বলেছেন রাহুল দ্রাবিড়।
শচীনের এক পরামর্শের কথা উল্লেখ করে দ্রাবিড় বলেন, ‘(২০১১ ইংল্যান্ড সফরে) এজবাস্টন টেস্টের কথা। সেবার ডিআরএস না নিয়ে আমি বড় ভুল করেছিলাম। আমি জিমি অ্যান্ডারসনকে একটা শট মারতে গিয়ে মিস করি। তখন আমার কানে ‘টুক’ করে একটা শব্দ আসে। কিন্তু ব্যাটে কিছু টের পাইনি।’ অ্যান্ডারসনের আহবানে সাড়া দিয়ে আম্পায়ার সাইমন টোফেল দ্রাবিড়কে আউটের সিদ্ধান্ত জানান। তাই দ্রাবিড়েরও কিছুটা দ্বিধা ছিল, ‘টোফেল যথেষ্ট ভালো আম্পায়ার। যখন উনি কোনো সিদ্ধান্ত নেন, তখন চ্যালেঞ্জ করাও কঠিন। তাই আমি অপরপ্রান্তে থাকা শচীনের কাছে পরামর্শ নিতে যাই।’
ওই মুহূর্তটাই দ্রাবিড়ের জন্য আফসোসের ছিল। তিনি বন, ‘শচীন আমাকে বলে, “রাহুল, ব্যাট থেকে কিন্তু যথেষ্ট জোরে আওয়াজ পাওয়া গেছে। আমার মনে হয়, বল ব্যাটে লেগেছে।’” তাই আমিও ভাবলাম সেরকমই হবে হয়তো। আমিই ভুল করেছি। ড্রেসিংরুমে ফিরেই আমি সেই আউটের রিপ্লে দেখতে চাই। যা দেখে ধারাভাষ্যকাররাও বর্ণনা করতে থাকেন– ব্যাটে লেগেছিল মূলত জুতার ফিতা। যার কারণে শব্দটাও কানে এসেছিল। অর্থাৎ, বলটা কোনোভাবেই ব্যাট স্পর্শ করেনি।’
অশ্বিন-দ্রাবিড়ের আলোচনায় ওঠে আরেকটি মজার ঘটনা। ২০২৩ সালে বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজ খেলছিল ভারত-অস্ট্রেলিয়া। সিরিজের মাঝে অশ্বিন অজি ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলার একটি ভিডিও সামনে আসে। সেটি উল্লেখ করে দ্রাবিড় বলেন, ‘তুমি তো অস্ট্রেলিয়ান দলকেও কোচিং করিয়েছিলে। আমার কাছে একটি ক্লিপ পাঠানো হয়েছিল। দুর্ভাগ্যবশত সেটা তামিল (ভাষায়) ছিল। যতটুকু বুঝেছি, তুমি মাঝ সিরিজেই অস্ট্রেলিয়ানদের শেখাচ্ছিলে কীভাবে স্পিন খেলতে হয়। তখন ভাবছিলাম, অ্যাশ (কী করছে), সিরিজ তো এখনো শেষ হয়নি!’
অশ্বিনও বিষয়টি স্পষ্ট করে দেন, ‘আমি যদি সত্যিই তা জানতাম, তাহলে আগে আমাদের ছেলেদেরই বলতাম কীভাবে স্পিন খেলতে হয়। অস্ট্রেলিয়ানদের কেন বলব?’ এরপর দ্রাবিড় মজার ছলে বলে উঠেন, ‘আমাকে তখন খোঁটা শুনতে হয়েছে, “অশ্বিন তোমার চেয়ে ভালো কোচিং দিচ্ছে, তুমি কী করছ?’” যা শুনে দুজনেই হেসে ওঠেন। তখন অশ্বিন জানান, ‘ইন্দোর টেস্টে সে (মিচেল স্টার্ক) একবার বাউন্সার দিলো, যা আমি ছেড়ে দিই। তখন আমরা ৮০/৭ (স্কোর) ছিলাম বোধহয়। লাঞ্চে যাওয়ার পথে স্টার্ক আমার সঙ্গে হাঁটছিল, তখন সে বলে উঠল, ‘আমি কি তোমাকে বলব কীভাবে বাউন্সার খেলতে হয়, ঠিক তোমার ইউটিউব ভিডিওতে যেভাবে দেখিয়েছ?’
যা শুনে অবাক হয়ে দ্রাবিড় বলেন, ‘ভালো লাগল জেনে যে স্টার্ক তামিল জানে! অথবা অস্ট্রেলিয়ানরা কোনো তামিল ছেলেকে বসিয়ে তা অনুবাদ করিয়েছে।’ পরে অশ্বিন অবশ্য ইঙ্গিত দেন, ভিডিওর সাবটাইটেলই হয়তো তাদের সাহায্য করেছিল।
ইএ/টিকে