ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে। কাতারে হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলার পর ওয়াশিংটনের আশঙ্কা, যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি সংক্রান্ত আলোচনাকে বানচাল করতে চাইছেন নেতানিয়াহু।
ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা দলের ঘনিষ্ঠ এক অজ্ঞাত সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর প্রতিবেদনে বলা হয়, দোহায় হামাসের শীর্ষ নেতাদের ওপর মঙ্গলবারের বিমান হামলাটি ইচ্ছাকৃতভাবে আলোচনার অগ্রগতিকে ঠেকানোর পদক্ষেপ হতে পারে।
ওই সূত্র পলিটিকোকে বলেন, ‘প্রতিবার যখন আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হয়, মনে হয় তিনি (নেতানিয়াহু) কাউকে বোমা মারেন। এ কারণেই প্রেসিডেন্ট ও তার উপদেষ্টারা নেতনিয়াহুর ওপর এতটা হতাশ।’ সূত্রটি আরও জানায়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও কাতারি নেতাদের সঙ্গে দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানো নিয়ে আলোচনা করেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কাতারে ইসরাইলি হামলার প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটন ও দোহা দোহা ঘনিষ্ঠ মিত্র। ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কাতারে এ ধরনের ঘটনা আর হবে না। তবে একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, হামাস নেতাদের হত্যা করা ‘যোগ্য লক্ষ্য’। পলিটিকোকে দেয়া মন্তব্যে ওই সূত্রটি আরও জানিয়েছে, ইসরাইলি নেতার বিরুদ্ধে কোনো রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টকে এতটা প্রকাশ্যে সমালোচনা করতে আমি বহুদিন দেখি নাই।
গত মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) গাজায় মার্কিন প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের সময কাতারের রাজধানী দোহায় হামাসের একটি অফিস ভবনকে লক্ষ্যবস্তু করে বিমান হামলা চালায় ইসরাইল।
ওই হামলায় ছয়জন নিহত হন, যার মধ্যে রয়েছেন সিনিয়র হামাস নেতা খলিল আল-হাইয়ার ছেলে হুমাম, তিনজন দেহরক্ষী এবং একজন কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা। হামলার জেরে পুরো অঞ্চলে উত্তেজনা তীব্রভাবে বেড়ে গেছে।
এদিকে দোহায় ইসরাইলের বিমান হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত জরুরি বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে দেয়া এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৫ সদস্য রাষ্ট্রই কাতারের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে এবং পরিস্থিতি প্রশমনের আহ্বান জানায়। তবে যৌথ বিবৃতিতে ইসরাইলের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
কাতারকে শক্তিশালী উপসাগরীয় মিত্র হিসেবেও বিবেচনা করে ওয়াশিংটন। গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছে কাতার।
গত মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেছেন, কাতারে ইসরাইলের একতরফা হামলা আমেরিকান বা ইসরাইলে কারও স্বার্থ রক্ষা করবে না। এই হামলায় তিনি অসন্তুষ্ট বলেও মন্তব্য করেন।
সূত্র: টাইমস অব ইসরাইল, রয়টার্স
এসএস/এসএন