রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সকল বৈষম্য দূরীকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধাসহ (পোষ্য কোটা) তিন দফা দাবি ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদায় না হলে পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ঘোষণা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ঠিক চার দিন আগে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে যাবেন তারা।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আলটিমেটামের কথা জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের ক্লাস, পরীক্ষা এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম (জরুরি সেবা ব্যতীত) বন্ধ থাকবে।
তাদের তিনটি দাবি হলো- প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা (পোষ্য কোটা) অবিলম্বে বাস্তবায়ন, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচলিত সকল ‘প্রশাসক প্রথা’ বাতিল এবং সকল শিক্ষকের জন্য ব্যক্তিগত চেম্বারের সুব্যবস্থা ও গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি।
এদিকে, আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটের ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন। নির্বাচনের আগে এই ধরনের কর্মসূচি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কিছু শিক্ষার্থী। তাদের অভিযোগ, নির্বাচনকে সামনে রেখে শিক্ষক-কর্মকর্তারা দাবি আদায়ের চেষ্টা করছেন।
তবে শিক্ষকরা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা জানিয়েছেন, রাকসু নির্বাচনের সঙ্গে এ আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
অথচ এই সময়ে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কর্মসূচি হতাশাজনক। নির্বাচনকে পুঁজি করে তারা তাদের দাবি আদায়ের চেষ্টা করছেন। আমি প্রার্থীদের প্রতি আহ্বান জানাই, অযৌক্তিক দাবির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল আলীম বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সুবিধা বহাল আছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো কার্যকর না হওয়ায় বাধ্য হয়ে কর্মসূচি দিতে হচ্ছে।’
রাকসু নির্বাচনে প্রভাব পড়বে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের কারণে নির্বাচনে কোনো প্রভাব পড়বে না। নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। আর প্রশাসন যদি এর আগেই আমাদের দাবি মেনে নেয়, আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করব।’
ইএ/টিএ