শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ আগুনের ঘটনার পর বিশেষ পরিকল্পনা করছে সরকার। নতুন করে অত্যাধুনিক সুবিধাসহ একটি চারতলা কার্গো ভিলেজ নির্মাণের চিন্তা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সম্প্রতি বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে ‘ফ্যাব্রিকেটেড স্ট্রাকচার’ তৈরি করে এমন একটি প্রতিষ্ঠান প্রেজেন্টেশন দিয়েছে। সরকারের মূল লক্ষ্য হলো দ্রুত কার্গো ভিলেজ ঠিক করে তার কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা।
সম্প্রতি এ লক্ষ্যে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সভাপতিত্বে একটি সভা হয়েছে। সেখানে কার্গো ভিলেজ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও দ্রুত কার্গো ভিলেজ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
বিমানবন্দরে শুল্ক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য যে জায়গায় আমদানি ও রপ্তানির পণ্য রাখা হয়, তাকে কার্গো ভিলেজ বলা হয়। অনেক বিমানবন্দরে আমদানি ও রপ্তানির জন্য আলাদা আলাদা কার্গো কমপ্লেক্স থাকে।
শুল্ক সম্পন্ন হওয়ার পর পণ্য চালান বুঝে নেন আমদানিকারক বা তাদের প্রতিনিধি। শুল্ক প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে পণ্য কত দিন কার্গো ভিলেজে থাকবে।
বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজের স্থানে একটি আধুনিক ডিজাইনের চারতলা ভবন তৈরির প্রস্তাব এসেছে এবং সরকারের মূল লক্ষ্য হলো দ্রুত কার্যক্রম শুরু করা।
ফ্যাব্রিকেটেড ষ্ট্রাকচার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা জানান, দ্রুত দুটি কনসালটেন্সি নেওয়া, বর্তমান কাঠামোর অবস্থা মূল্যায়ন, পরামর্শ কমিটি গঠন এবং নতুন ডিজাইন তৈরির মাধ্যমে দ্রুত কার্যক্রম শুরু করার সুপারিশ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, প্রকল্পের কাজ একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করবে, যার মধ্যে থাকবে বুয়েট দ্বারা কাঠামোর পরীক্ষা এবং টেকনিক্যাল কমিটি দ্বারা নতুন ডিজাইন তৈরি। তবে, আলোচনার দিন খরচের কোনো ধারণা দেওয়া হয়নি।
এদিকে, রপ্তানিকারকদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি) দাবি করেছে, এই অগ্নিকাণ্ডের কারণে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে নিরাপত্তাহীনতা, গুদাম অব্যবস্থাপনা ও মালামাল চুরির অভিযোগ সত্বেও কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। এ ঘটনায় তৈরি পোশাক, ওষুধ, কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন রপ্তানি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বিদেশি ক্রেতাদের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হতে পারে।
মোহাম্মদ হাতেম বলেন, অগ্নিকাণ্ড প্রমাণ করে কার্গো ভিলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের বীমা দাবি দ্রুত নিষ্পত্তি এবং বীমা না করা পণ্যের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ তহবিল গঠনের দাবি জানান। তিনি আরো বলেন, এই অগ্নিকাণ্ডের দায় সিএএবি, কাস্টম হাউস এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস—কেউই এড়াতে পারবে না।
আইকে/টিএ