লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. রেদোয়ান আহমেদ বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী সর্বদাই দেশের শান্তি, শৃঙ্খলা ও সার্বভৌমত্বের বিরোধীতা করে আসছে। ভারত বিভক্তকালে মাওলানা মওদুদী পাকিস্তান সৃষ্টির বিরোধীতা করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালে গোলাম আযমও বাংলাদেশ সৃষ্টির বিরোধীতা করেছেন। আজ তারা পিআর পদ্ধতির অযৌক্তিক দাবি তুলে আসন্ন নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা শাহী ঈদগাহ জামে মসজিদ মাঠে এলডিপি’র ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত কখনো এদেশের মঙ্গল চায়নি মন্তব্য করে ড. রেদোয়ান বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামেও তারা পাকিস্তানি হানাদারদের পক্ষ নিয়ে অস্ত্র হাতে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। এখন পিআর পদ্ধতি দাবি করে জাতিকে বিভ্রান্ত এবং নির্বাচনকে বিলম্বিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জাতি তাদের এই প্রলোভনে পড়বে না।
জামায়াতের চলমান আন্দোলন সম্পর্কে এলডিপি মহাসচিব আরও বলেন, রাষ্ট্র সংস্কার, সংবিধান সংস্কার বা অন্যান্য সংস্কার কর্মকাণ্ড নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের শুরু থেকে জামায়াতে ইসলামী কখনো পিআর পদ্ধতি নিয়ে জাতীয় নির্বাচনের দাবি তোলেনি। এখন তারা আন্দোলনে নেমেছে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন সমমনা দলও পিআর পদ্ধতির বিরুদ্ধে মাঠে নামবে। বাংলাদেশের মানুষ কখনোই পিআর পদ্ধতিকে গ্রহণ করবে না এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হতে দেবে না।
এ সময় শেখ হাসিনা ও ভারতের সমালোচনা করে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারতের মদদে শেখ হাসিনা এদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছে। শেখ হাসিনার শাসনামলে ভোটবিহীন এদেশে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, এসবের পেছনে তার একটি বড় শক্তি ছিল। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত তাকে মদদ যুগিয়েছে। ভারতকে আমরা বন্ধু মনে করতাম। কারণ স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারত আমাদের আশ্রয় দিয়েছে, বাসস্থান দিয়েছে, প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছে। আমরা তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই, কিন্তু দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সব কিছু বিলিয়ে দিয়ে আমরা তাদের সঙ্গে ওই বন্ধুত্ব চাই না।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন, উপজেলা এলডিপি সভাপতি একেএম সামছুল হক মাস্টার, কেন্দ্রীয় এলডিপি উপদেষ্টা অধ্যক্ষ আবুল কাশেম, উপজেলা এলডিপি সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবু তাহের, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ চেয়ারম্যান।
কেরণখাল ইউনিয়ন এলডিপি সভাপতি সার্জেন্ট (অব.) আব্দুল হকের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন- চান্দিনা পৌর এলডিপি সভাপতি অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন ভুইয়া, সহ-সভাপতি সাবেক কমিশনার আবদুস সামাদ, মাইজখার ইউনিয়ন এলডিপি সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন ভুঁইয়া, উপজেলা গণতান্ত্রিক যুবদল সভাপতি প্রভাষক সাইফুল ইসলাম বাবর, উপজেলা গণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সাক্কু, মহিচাইল ইউনিয়ন গণতান্ত্রিক যুবদল সভাপতি প্রভাষক সোহেল খান।
সম্মেলনে আব্দুল হককে সভাপতি ও ডা. ফারদিন ফারুককে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কেরণখাল ইউনিয়ন এলডিপি, ছিদ্দিকুর রহমান রিপনকে সভাপতি ও কামরুজ্জামানকে সাধারণ সম্পাদক করে গণতান্ত্রিক যুবদল, আকতার হোসেনকে সভাপতি ও মো. পারভেজকে সাধারণ সম্পাদক করে গণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাসেবকদলের কমিটি ঘোষণা করেন প্রধান অতিথি।
পরে কেরণখাল ঈদগাহ সংলগ্ন স্থানে ইউনিয়ন এলডিপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কার্যালয় উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি।
কেএন/টিএ