সাবেক সংসদ সদস্য ও কলামিস্ট গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, সারা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে জলে, স্থলে ও অন্তরিক্ষে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এই সরকার প্রথমবার সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগের যারা মিছিল করছে, তাদেরকে ধরার জন্য এবং দেশের মধ্যে থেকে যারা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড অর্গানাইজ করছে, তাদেরকে পাকড়াও করার জন্য এবং ইতোমধ্যে গত কয়েকদিনে কয়েক হাজার নেতাকর্মী যে মিছিল করার যে চেষ্টা, সেখান থেকে বহুসংখ্যক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নেতা হিসেবে একজন সাবেক সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তার এবং অন্যান্য যারা রয়েছেন বাংলাদেশে- পৌরসভার মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পাইকারি হারে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিওতে এসব কথা বলেন তিনি।
গোলাম মাওলা রনি বলেন, জেলখানা এখন আওয়ামী লীগের লোকজনে পরিপূর্ণ। এমনকি আওয়ামী লীগের যে সকল মহিলা নেত্রী রয়েছে, তাদের সংখ্যা যে কত আমি এটা বলতে পারব না। তবে বিভিন্ন কারাগার গুলোতে যে মহিলা সেল রয়েছে, সেখানে আওয়ামী লীগের মহিলা নেতৃত্বের দ্বারা বা কর্মীদের দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। অভিযোগ আসছে যে জেলখানাতে মহিলা যারা বন্দি রয়েছে, তারা আনহ্যাপি।
সেখানে অনেকে মিছিল করছেন (পজিটিভ অর্থে) আমরা যেটা জানতে পারছি। আর নেতিবাচক কথা হলো যে তাদের সঙ্গে জুলুম করা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে, কেন করা হচ্ছে, কী কারণে করা হচ্ছে- এই ব্যাপারে কারা কর্তৃপক্ষ কোনো বক্তব্য দেয়নি। তবে এখানে একজন নারী জেলারের নাম স্পষ্টত চলে আসছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে যারা দুর্বল চিত্তের, আর অন্যদিকে এ ধরনের জুলুম এবং অত্যাচারে আওয়ামী লীগ যারা সাহসী মানুষ, তারা আরো বেপরোয়া হয়ে পড়েছে এবং তাদের মধ্যে এক ধরনের বন্ড তৈরি হয়ে গেছে যে দেয়ালের পিঠ ঠেকে গেছে।
আর কী হবে, জেলে নেবে, মেরে ফেলবে, গুম করবে। কিন্তু আমরা এখন যেভাবে পালিয়ে আছি, যেভাবে বাড়ি যেতে পারছি না, তো সেখানে ধরে নিয়ে যাক, অসুবিধা নেই। কিন্তু লড়াই করব। এর ফলে আওয়ামী লীগের মিছিলগুলো ক্রমশ ঝটিকা মিছিল থেকে বাড়তে বাড়তে এখন এটা রীতিমতো রেগুলার মিছিল হয়ে পড়েছে এবং এদের মধ্যে ভয়ডর কিছু নেই।
তারা হুটহাট করে রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকাতে মিছিল করছে, পুলিশের সামনে মিছিল করছে।
পুলিশের গাড়িকে ঘেরাও করে মিছিল করছে এবং পুলিশ কোনো অ্যাকশনে যেতে পারছে না। এর কারণ হলো যে একটা গাড়িতে যদি ৬-৭ জন পুলিশ থাকে, আর মিছিলকারী যদি ১ হাজার হয়, পুলিশের সেখানে আসলে কিছু করার থাকে না। উল্টো পুলিশের মনে একটা আতঙ্ক তৈরি হয় যে এরা যদি আমাদের প্রতি আক্রমণ করে, আমাদের অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়, কী করার আছে। এর কারণ হলো, এই পুলিশ তো কিছুদিন আগে যেভাবে নির্মমতার শিকার হয়েছে এবং যেভাবে তাদেরকে মারা হয়েছে, যেভাবে তাদের অস্ত্র-গোলাবারুদ লুট করা হয়েছে, সেগুলো তো এখনো উদ্ধার করা হয়নি। কাজেই পুলিশের মধ্যে একটা আতঙ্ক রয়েছে।
এমআর/টিকে