মসজিদের কাছে তামাক বিক্রি নিষিদ্ধ করল সৌদি সরকার

সৌদি আরবের পৌরসভা ও আবাসন মন্ত্রণালয় নতুন এক নির্দেশনায় জানিয়েছে, মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ৫০০ মিটারের মধ্যে কোনো তামাকজাত পণ্য বিক্রি করা যাবে না। এই সিদ্ধান্ত দেশের ধর্মীয় পবিত্রতা রক্ষা ও তরুণ প্রজন্মকে ধূমপানের ক্ষতি থেকে দূরে রাখার লক্ষ্যে গৃহীত হয়েছে।

নতুন এই নীতিমালা সৌদি সরকারের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচির অংশ। এর মাধ্যমে ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব কমানো, সমাজে স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি এবং নগর এলাকায় ব্যবসায়িক পরিবেশকে আরও সুশৃঙ্খল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সিগারেট, শীশা ও ই-সিগারেটসহ সব ধরনের তামাকজাত পণ্য বিক্রির দোকানগুলোকে নির্দিষ্ট মানদণ্ড পূরণ করতে হবে। প্রতিটি দোকানকে বৈধ বাণিজ্যিক নিবন্ধন, সিভিল ডিফেন্স অনুমোদন ও পৌরসভা লাইসেন্স নিতে হবে।

নিয়ম অনুযায়ী, তামাক বিক্রির দোকানগুলোকে বাণিজ্যিক ভবনের ভেতরে কমপক্ষে ৩৬ বর্গমিটার জায়গা দখল করে থাকতে হবে। স্থানীয় পৌর কর্তৃপক্ষ চাইলে অতিরিক্ত কিছু শর্তও আরোপ করতে পারবে।

দোকানের বাইরে কোনো তামাক ব্র্যান্ডের লোগো, পোস্টার বা বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা যাবে না। শুধুমাত্র দোকানের নাম ঝুলানো যাবে। তাছাড়া ফুটপাত দখল বা খোলা স্থানে পণ্য প্রদর্শনও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
প্রতিটি দোকানে অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত সিসি ক্যামেরা স্থাপন বাধ্যতামূলক। এছাড়া দোকানগুলোতে ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সিস্টেম, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে হবে।

সব ধরনের তামাক পণ্যকে সৌদি ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অথরিটি (SFDA)-র নির্ধারিত মান অনুসারে হতে হবে। প্রতিটি পণ্যে স্পষ্টভাবে ধূমপানের ক্ষতি সম্পর্কে সতর্কবার্তা দিতে হবে এবং পণ্য অবশ্যই সিল প্যাকেট আকারে বিক্রি করতে হবে।

নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, তামাকজাত পণ্যে কোনো ছাড়, উপহার, প্রোমোশন বা টেস্টিং কার্যক্রম চালানো যাবে না। পাশাপাশি, ভেন্ডিং মেশিনের মাধ্যমে বিক্রি করাও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

মসজিদ ও ধর্মীয় স্থানের আশেপাশে ধূমপান বা তামাক বিক্রি ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকেও অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এই আইনটি ইসলামি পরিবেশ সংরক্ষণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সৌদি সরকার ব্যবসায়ীদের নতুন নীতিমালা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে আহ্বান জানিয়েছে। নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ।

কেএন/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ঢাকায় নতুন ইউএনওডিসি প্রতিনিধির পরিচয়পত্র পেশ Dec 10, 2025
img
আজ জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ Dec 10, 2025
img
গান গাইতে গাইতেই স্টেজে পড়ে গেলেন মোহিত চৌহান, কেমন আছেন গায়ক? Dec 10, 2025
img

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ

আতালান্তার কাছে ২-১ গোলে হারল চেলসি Dec 10, 2025
img
‘ধুরন্ধর’-এ নিষ্ঠুর চরিত্রে অভিনয় করে ২.৫ কোটি পারিশ্রমিক! Dec 10, 2025
img
মাদারীপুর জেলায় হানাদারমুক্ত দিবস আজ Dec 10, 2025
img
ওয়ার্কশপে অস্ত্র তৈরি, গ্রেপ্তার কারিগর Dec 10, 2025
img
তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ : টুকু Dec 10, 2025
img
'বিয়ের সাবস্ক্রিপশন বাতিল করতে ভুলে গিয়েছিলাম', বিবাহবার্ষিকীতে মনখারাপ দেবলীনার! Dec 10, 2025
img

ফাওজুল কবির খান

দুর্নীতিযুক্ত প্রক্রিয়া থেকে একটা দুর্নীতিমুক্ত প্রক্রিয়ায় যাচ্ছি Dec 10, 2025
img
প্রচার-প্রোপাগান্ডা খাতে আর্থিক বরাদ্দ ২০ গুণ বাড়াল ইসরায়েল Dec 10, 2025
img
রিয়াদ-দোহাকে সংযুক্ত করতে উচ্চগতির রেল চালু করছে সৌদি ও কাতার Dec 10, 2025
img
নারীবাদীদের ‘নোংরা দুশ্চরিত্রা’ হিসেবে অভিহিত করলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের স্ত্রী Dec 10, 2025
img
রুশ সামরিক বিমান বিধ্বস্ত, নিহত সব আরোহী Dec 10, 2025
img
পাকিস্তানকে আরও ১২০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে আইএমএফ Dec 10, 2025
img
পেনাল্টিতে ইন্টারের মাঠে লিভারপুলের জয় Dec 10, 2025
img
বেইজিং চুক্তি বাস্তবায়নে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে সৌদি আরব, ইরান ও চীন Dec 10, 2025
img

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ

কুন্দের জোড়া গোলে ফ্রাঙ্কফুর্টকে হারাল বার্সেলোনা Dec 10, 2025
img
বেপরোয়া প্রাইভেট কারের ধাক্কায় পিকআপ উল্টে নষ্ট হাজারো ডিম Dec 10, 2025
img
ঝিনাইদহে ২ ট্রাকের সংঘর্ষ, প্রাণ গেল চালকের Dec 10, 2025