বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্টের তালিকা থেকে প্রথমবারের মতো শীর্ষ দশ থেকে বাদ পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
একটি পাসপোর্ট দিয়ে কতটি দেশে ভিসা ছাড়াই ভ্রমণের সুযোগ পাওয়া যায় সেটিই এই সূচকের মূল মানদণ্ড। সেই বিচারে যুক্তরাষ্ট্র ও মালয়েশিয়া বর্তমানে যৌথভাবে ১২তম স্থানে অবস্থান করছে। উভয় দেশের নাগরিকরা বর্তমানে ১৮০টি দেশে ভিসা ছাড়া প্রবেশ করতে পারেন।
২০১৪ সালে এই তালিকায় শীর্ষস্থানে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি ২০২৫ সালের জুলাইতেও তারা শীর্ষ ১০-এ ছিল। কিন্তু সর্বশেষ চতুর্থ-ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো তারা শীর্ষ ১০ থেকে ছিটকে পড়ে।
সর্বশেষ সূচকে এশিয়ার তিন দেশ রয়েছে তালিকার শীর্ষে: সিঙ্গাপুর- ১৯৩টি দেশে ভিসা-মুক্ত প্রবেশাধিকার, দক্ষিণ কোরিয়া - ১৯০টি দেশ ও জাপান ১৮৯টি দেশে ভিসামুক্ত সুবিধা পায়।
যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টের শক্তি কমে যাওয়ার পেছনে রয়েছে কয়েকটি কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত ও পারস্পরিক ভিসা নীতির ঘাটতি। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ব্রাজিল যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের জন্য ভিসা-মুক্ত সুবিধা বাতিল করে।
অন্যদিকে চীন ইউরোপের অনেক দেশের জন্য ভিসা ছাড় দিলেও যুক্তরাষ্ট্র সেই তালিকায় জায়গা পায়নি। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ জটিলতাই বেড়েছে।
এক সময়ের শীর্ষস্থান দখলকারী যুক্তরাজ্যও পিছিয়ে পড়েছে। সর্বশেষ তালিকায় তাদের অবস্থান ৮তম, যা তাদের ইতিহাসের সর্বনিম্ন। জুলাইয়ে তারা ছিল ৬ষ্ঠ স্থানে।
অন্যদিকে, গত এক দশকে চীন দেখিয়েছে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। ২০১৫ সালে যেখানে চীন ছিল ৯৪তম, সেখানে এখন তারা উঠে এসেছে ৬৪তম স্থানে। এই সময়ের মধ্যে তারা ৩৭টি নতুন দেশের ভিসা-মুক্ত প্রবেশাধিকার পেয়েছে।
হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স তৈরি করে লন্ডনভিত্তিক হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স। এই সূচকটি আন্তর্জাতিক এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন-এর তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি এবং ২২৭টি দেশের পাসপোর্ট শক্তি বিশ্লেষণ করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিসা-মুক্ত ভ্রমণের সুবিধা শুধু একটি দেশের বৈশ্বিক অবস্থান নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, কূটনীতি ও পারস্পরিক ভ্রমণ চুক্তির প্রতিফলনও বহন করে।
টিজে/এসএন