সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেছেন, বর্তমান সময় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) একটা কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। জুলাই সনদ স্বাক্ষর না করে তারা রীতিমত একটা কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে। তাদের পাশে এখন কেউ নেই। অন্যদিকে এনসিপি কি করবে; তারা কি আলাদা জোট করে নির্বাচন করবে।
আমি বলব তাদের সেই অবস্থাও নেই, সেটাতেও লাভ হবে না। যদি তারা বিএনপির সঙ্গে যায় তাদের কি লাভ হবে আর জামায়াতের সঙ্গে গেলে কি লাভ হবে। অর্থাৎ এখন এনসিপিকে যেতে হচ্ছে এর-ওর সঙ্গে। নিজে একটি শক্তি হিসেবে দাঁড়াতে পারেনি।
দল করার সময় বা তার আগের যে সাংঘাতিক রকমের সম্ভাবনা দেখা গিয়েছিল, যে রমরমা অবস্থা ছিল, সেটা আস্তে আস্তে স্থিমিত হয়ে গেছে।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে মোস্তফা ফিরোজ এসব কথা বলেন।
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, অন্তত এখন কেউ বলবে না এনসিপির অবস্থান খুব উপরের দিকে। যদিও সরকারের কিছুটা আনুকূল্য ও সহানুভূতি আছে, যার কারণে এনসিপিকে মোটামুটি বিএনপি-জামায়াতের সমান মর্যাদায় দেখা হয়।
এনসিপির গুরুত্ব বিবেচনা করে এখন পর্যন্ত শাপলা বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনও কোনো চূড়ান্ত ফয়সালা দেয়নি। তবু দলে টানাপোড়েন আছে। ১১ জুলাই সনদ স্বাক্ষর না করা, বিএনপির সঙ্গে বিরোধ এবং জামায়াতের সঙ্গে সাম্প্রতিক মতবিরোধ, সব মিলিয়ে এই চাপ এখন বেশ স্পষ্ট। এসব কারণে দলের ভেতরে খুব শক্ত কোনো ঐক্য আছে, তা বলা যাবে না। প্রত্যেকেরই নিজস্ব চিন্তাধারা আছে, যদিও আপাতত সবাই এক জায়গায় রয়েছে।
কিন্তু এই একত্রিত অবস্থাটা কতদিন টিকবে, সেখানে ফাটল ধরবে না, এমন কোনো নিশ্চয়তাও নেই।
তিনি বলেন, এনসিপি নেতাদের মধ্যে আস্তে আস্তে এক ধরনের হতাশা দানা বাঁধতে শুরু করেছে। এর বহিঃপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে বিভিন্নভাবে, কেউ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন, কেউ দল পরিবর্তন করছেন, আবার কেউ কেউ দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করছেন। নানান ধারা-উপধারার এই মিশ্রণে এখন এনসিপি এক ধরনের চাপের মধ্যে আছে, এটা সত্য।
তিনি আরো বলেন, এনসিপিকে ঘিরে অন্যান্য দলের চাপও ক্রমাগত বাড়ছে। বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে খবর আসছে, দলে দলে এনসিপির নেতাকর্মীরা অন্য দলে যোগ দিচ্ছেন। ফলে আগামী দিনে কেন্দ্রীয়ভাবে কী হবে, কতটা ঐক্য টিকবে, এখন সেটাই তাদের জন্য বড় প্রশ্ন, বরং বলা যায়, এক কঠিন লড়াই।
আইকে/ টিকে