ইতালির রাজধানী রোমের কেন্দ্রস্থলে একটি মধ্যযুগীয় টাওয়ারের অংশ ধসে পড়ে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্মকর্তারা। রোমানিয়ার নাগরিক অক্টাই স্ট্রোইসিকে দীর্ঘ উদ্ধার অভিযানের সময় সচেতন ছিলেন এবং গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ইতালির রাজধানী রোমের কেন্দ্রস্থলে একটি মধ্যযুগীয় টাওয়ারের অংশ ধসে পড়লে অক্টাই আটকা পড়েন। বিখ্যাত রোমান ফোরামের পাশে ও কলোসিয়ামের কাছাকাছি অবস্থিত ‘তোরে দেই কন্তি’ নামের ঐতিহাসিক টাওয়ারে এ ঘটনা ঘটে।
প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা থাকার পরে, স্থানীয় সময় রাত ১১টায় তাকে উদ্ধার করা হয়। উমবার্তো আই হাসপাতালের বরাত দিয়ে ইতালীয় সংবাদ সংস্থা এএনএসএ জানিয়েছে, ‘অক্টাই স্ট্রোইসিকে বাঁচানোর জন্য প্রায় এক ঘন্টা ধরে চেষ্টা করা হয়। তবে তাকে বাঁচানো যায়নি।’
দমকল বাহিনী ও উদ্ধারকর্মীরা প্রায় সারারাত কাজ করে স্ট্রোয়িসিকে জীবিত উদ্ধার করেন।
যদিও ভঙ্গুর টাওয়ারটি ধসে পড়ার আশঙ্কা ছিল তারপরও তারা উদ্ধার অভিযানে ড্রোন ও ভারী যন্ত্র ব্যবহার করে। পুরো অভিযানের সময় স্ট্রোয়িসি সচেতন ছিলেন এবং উদ্ধারকর্মীদের সঙ্গে কথাও বলছিলেন। তার স্ত্রীও ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিলেন।
রোমানিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অক্টে স্ট্রোয়িসি রোমানিয়ার নাগরিক ছিলেন।
আহত আরো তিনজনের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
স্ট্রোয়িসি মধ্যযুগীয় এই টাওয়ারে সংস্কার কাজ করছিলেন। টাওয়ারটি রোমান ফোরামের অংশ হলেও বহু বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। ৬০ বছরের বেশি বয়সী স্ট্রোয়িসিকে উদ্ধারের কাজ চলাকালীন আবারও ২৯ মিটার (৯০ ফুট) উঁচু টাওয়ারের আরেকটি অংশ ভেঙে পড়ে। এতে আশপাশে ধুলোয় ঢেকে যায় এবং উদ্ধার অভিযান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয়।
পরে আবার শুরু হয়। এক দমকলকর্মী চোখে আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে অন্যরা নিরাপদ আছেন।
৬৭ বছর বয়সী ওত্তাভিয়ানো ধসের সময় ভবনের ভেতরেই ছিলেন কিন্তু একটি বারান্দা দিয়ে তিনি অক্ষত অবস্থায় বেরিয়ে আসেন। তিনি বলেন, ‘এটা নিরাপদ নয়। আমি শুধু বাড়ি যেতে চাই।’
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি উদ্ধার অভিযান চলাকালে এক্স-এ লিখেন, ‘তার পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা।’
ঘটনার পর রোমের আইনজীবী অফিস তদন্ত শুরু করেছে। রোমের মেয়র এবং ইতালির সংস্কৃতি মন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ১৩শ শতকে নির্মিত এই টাওয়ারটি রোমের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। নিরাপত্তার কারণে পুলিশ আশপাশের সড়কগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। এই টাওয়ারটি পোপ ইনোসেন্ট তৃতীয় তার ভাইয়ের বাসস্থান হিসেবে নির্মাণ করেছিলেন।
সূত্র : বিবিসি
আরপি/টিকে