আমার রাজনৈতিক জীবনের অপমৃত্যু অকালে ঘটে গেলো: পাপিয়া

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২৩৭ আসনে প্রার্থীদের প্রাথমিক নামের তালিকা ঘোষণা করছে বিএনপি। সেখানে নাম নেই বিএনপির সহ মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া। এর প্রতিক্রিয়া তিনি বলেছেন, তাহলে আমার জীবনের এতগুলো দিন আমি যে নষ্ট করলাম, এখন তো মনে হয়, আমি ভুল করছি এবং আমি আস্তে আস্তে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবো এবং কোনো অ্যাক্টিভিটির ভিতরে আমি আর যাবো না, কারণ আমি কার জন্য যাবো, আমার পরিবারের জন্য তো আমি দল করি না, আজকে একটা পশ্য কোটার বাচ্চা বাচ্চা ছেলে-মেয়েদের কাছে পরিবার কোটায় ফেলে আমাকে, আমার রাজনৈতিক জীবনটাকে কলুষিত করা, অস্বীকার করা, এটা আমি মানে, এর চেয়ে লোমহর্ষক ঘটনা, মর্মান্তিক ঘটনা একজন রাজনৈতিক ব্যক্তির জীবনে আসলে হয় না।

সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া বলেন, এত বছর পার্টি করার পর পার্টি যদি এখন বলে যে, তুমি অমুকের স্ত্রী, তুমি পারিবারিক কোটায় পড়ে গেলা, এটা তো আসলে আমার রাজনৈতিক জীবনের একটা অপমৃত্যু অকালে ঘটে গেলো, কারণ এখান থেকে উত্তরণের আর কোনো সুযোগ এবং পথ নাই, কারণ আমি তো আমার সংসারের পরিচিতি আমি রাজনৈতিক পরিচিতির জন্য ত্যাগ করতে পারবো না। আমার সন্তানদের বাবার অস্তিত্ব আমি অস্বীকার করতে পারবো না। কিন্তু দেখেন বিএনপির গঠনতন্ত্র এ ধরনের কোনো কিছু এখন পর্যন্ত নাই যে হচ্ছে, পরিবারের এক ব্যক্তিকে দুইজন পার্টি পার্টি করা যাবে না, গেলে তোমরা কেউ মানে কাঙ্ক্ষিত পথ পাবে না এবং তোমার স্বীকৃতি তুমি পাবে না। এটার তো লাভজনক প্রতিষ্ঠান না। পার্টি আমার ত্যাগ তিতিক্ষা, সততা, পার্টির প্রতি কন্ট্রিবিউশন, আনুগত্য সবকিছু পরিবার কোটার ভেতর ঢোকাবে কেন?

তিনি আরও বলেন, এখন আমি ছোটোবেলা রাজনীতি করি, আমার একটা দর্শন ছিল, চিন্তাভাবনা ছিল, একটা পরিকল্পনা ছিল, আমার জীবনে অন্য কোনো পরিকল্পনা নেই, একটা পরিকল্পনা যে, আমি একটা নির্বাচিত এমপি হব। মেয়েরা পিছিয়ে আছে, মেয়েদের পোস্ট দেয় না, পদবি দেয় না, প্রাপ্য মাফিক দেয় না, সমস্ত গরুর হাটের মতো মেয়েদেরকে ধরে, সব সহসম্পাদক দিয়ে দেয়, যে যে স্টান্ডিং কমিটিকে নেতাদের বাড়িতে দৌড়ায় দৌড়ায় গঠণতন্ত্র নিয়ে গেছে আগের পোস্টটা নেয়ার জন্য তাদের আগে হয়েছে, এখানে সিনিয়ারিটি, জুনিয়রিটি পর্যন্ত কোনো কিছু মেইনটেইন করা হয় নাই, তো তাহলে এখন পারিবারিক কোটার ভিতরে তাদের সাথে আমাকে কোনোভাবে তুলনা করা মানে কি? আমার জীবনের যতগুলো কন্ট্রিবিউশন এবং আমি এই দলটাকে যে ওন করে আসছি, টোটালটাকে অস্বীকার করা হয় এবং আমাদের ত্যাগ দেখে অদূর ভবিষ্যতে কোন মেয়ে, কোন ছেলে যে ত্যাগী হবে এই পথটা কিন্তু রুদ্ধ করে দিল দল। দল এটা যদি স্টিক থাকে, দল তাহলে এটা রুদ্ধ করা হলো।

পাপিয়া আরও বলেন, আর প্রত্যেকটা সূত্রে দেখবেন ব্যতিক্রম থাকে, আমরা যে মামলা করি, সিআরপিসির একটা সেকশনে ফেলে মামলা করা হয়, অনেক ফাক-ফোকর থাকে, এখন আমি এরকম একটা ছাত্রদল থেকে তৈরি হয়ে আসা একটা মেয়ে এবং এত কন্ট্রিবিউশন, এত দলের প্রতি আনুগত্য রাখার পর এতগুলো মামলার আসামি বিচার বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিককে যেভাবে আমার তার সাথে হয় কোর্টকাচারির ভিতরে থেকে আমি জেলে গেলাম তাছাড়া পলিটিকার মামলা, আমি জেলে গেলাম ৫ জানুয়ারি ২০২৫ বাংলাদেশে কোন ঘটনাই ছিল না ওই প্রাচীর টপকাতে, যে পেপার সাপেক্ষে কতদিন বন্দী থেকে গেলেন বেগম খালেদা জিয়া সমস্ত কিছু চিন্তাভাবনা করে পারিবারিক কোটায় ফেলাটা এটা আপনি যাই আসামি এটা প্রচন্ড একটা প্রচন্ডে রাজনৈতিক দলের জন্য এটা পরবর্তী পর্যায়ে বুঝতে পারবে, যখন ত্যাগীরা ত্যাগ করতে চাইবে না, আমাদেরও তো মেয়াদ তৈরি তৈরি হবে না। আমাদের মতো কর্মীও আর আসবে না। তখন তারা বুঝতে পারবে যে সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল না পাপিয়ার ক্ষেত্রে রাইট ছিল। এবং এটার সংশোধন কিংবা তখন পস্তালেও আর কিছু কিন্তু পাবে না। কারণ আমাকে তো আর এখানে সক্রিয় করার কোনো সুযোগ নাই। 

সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, এখানে বলতে পারতো যেটা বেনিফিশারি বলতে ন্যামভবনের বাসা তুমি নিতে পারবা না। তোমার পার্টির যে ভাতা পাবে নির্বাচিত পার্টির ফান্ডে দিতে হবে। কন্ডিশন দিতে পারতো। কিন্তু আমাকে এইভাবে গৃহবধুদের তালিকায় ফেলে, গৃহবধূরা তার স্বামীর সিটে যে ভোট করেছে, করে স্বামীর জন্য যে কাজটা করেছে, ওই গৃহবধূর তালিকায় আমার সারা জীবনের প্রজ্ঞা রাজনীতি কন্ট্রিবিউশন, দুইবারের ভিপি হওয়া, মার খাওয়া, দৌল খাওয়া, জেল কাটা এটা কোনোভাবেই এটা মানার মতো পরিস্থিতি না। কিন্তু আমি যেহেতু একটা দল করি এটা আমাকে মেনে নেয়া ছাড়া আমার কোন পথ তো নাই। কারণ আমি তো অন্য কোন দলে যাইনি, যাবও না এবং স্বতন্ত্র ভোটও আমি করবো না। 

স্বাভাবিক কারণে এই যে আমার আমার অন্তরের যে ক্ষরণ, এই খরণটা তো পার্টির জন্য অশুভ এবং এটার জন্য আজ হোক কাল হোক পার্টির মানসিকভাবে হলেও বিপর্যস্ত হবে, এবং কর্মী তৈরির ক্ষেত্রে একটা প্রতিবন্ধক হয়ে গেল এটা, এবং বিএনপির গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করতে হবে তাহলে এক বাড়িতে দুই পার্টি যদি করি সেটা কি করবে? হাজব্যান্ড এক পার্টি, ওয়াইফ এক পার্টি এটা কি পার্টি এলাউ করবে এটা নিয়ে প্রসঙ্গ উঠবে না, এর আগে ছাত্রদলের সভাপতি করছিল যাকে তার ভাই তার পরিবার নিয়ে অনেক কথা আসছে যে সে আওয়ামী লীগ পরিবারের ছেলে, যশোরের যে ছেলেটি, আমি নাম বলতে তাকে বিব্রত করতে চাই না, সে একা বিএনপি করে বলে তাকে সেখান থেকে কিন্তু সরায় দেওয়া হলো, তাহলে এই ক্ষেত্রে তার পরিস্থিতিটা কি হবে। তাহলে আসলে একটা সুস্পষ্ট সুনির্দিষ্ট, নীতিমালা থাকা দরকার, যেই নীতিমালার ভিত্তিতে মানুষ মানুষের জীবনের এম্বিশনটা এবং নীতিটা ঠিক করবে।

ইউটি/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
অভিনেত্রী তানজিন তিশার বিরুদ্ধে মামলা Nov 05, 2025
img
ঢাবিতে ভাসমান কিছু থাকবে না, এটা মেনে নেওয়া যাবে না : জাহেদ উর রহমান Nov 05, 2025
img
প্রথম প্রেমের বিষয়টাই খুব মধুর এবং সুন্দর: কমলিকা ব্যানার্জি Nov 05, 2025
img
দায়িত্ব পাওয়ার ৩ ঘণ্টার পরই ‎পদত্যাগ করলেন ব্রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার Nov 05, 2025
img
সর্বমিত্রের মাস্তানি আসলে শিবিরের মাস্তানি : জাহেদ উর রহমান Nov 05, 2025
img
সব অভিমান ভুলে আমরা ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করবো: বিএনপি প্রার্থী Nov 05, 2025
img
গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারালেন এরশাদ উল্লাহ'র সহযোগী সরোয়ার বাবলা Nov 05, 2025
img
খুলনায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পরিদর্শনে জয়া আহসান ও ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত Nov 05, 2025
img
দেশজুড়ে এক মাসে ১৮ জেলায় কনসার্ট অ্যাশেজের Nov 05, 2025
img
সুনীল ছেত্রীকে ছাড়াই বাংলাদেশে খেলতে আসছে ভারত Nov 05, 2025
img
মামদানিকে শুভেচ্ছা জানালেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান Nov 05, 2025
img
প্রতিবাদী ও বুদ্ধিজীবী আলোচনা বিনোদনের আড়ালে: কৌশিক সেন Nov 05, 2025
img
দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে টেস্ট দলে জায়গা পেলেন পান্ত Nov 05, 2025
img
লামিনে ইয়ামাল রিয়ালে মাদ্রিদে খেলার অযোগ্য: ইভান জামোরানো Nov 05, 2025
img
সর্ব মিত্রকে ট্রায়ালে ফেলবেন না : জুমা Nov 05, 2025
img
জাতীয় সংসদের অর্ধেক আসনের দাবি নারী নেত্রীদের Nov 05, 2025
img
জনসমর্থনে শীর্ষ ১০ এর ভিতর না থাকলে রাজনীতি ছাড়বেন তারেক রহমান Nov 05, 2025
img
বার্সেলোনার দায়িত্ব ছাড়ছেন কোচ হান্সি ফ্লিক! Nov 05, 2025
img
কিছুক্ষণ পরই আকাশে দেখা দেবে ‘সুপারমুন’ Nov 05, 2025
img
রিমান্ডে সেই বুয়েট ছাত্র শ্রীশান্ত Nov 05, 2025