এমন কিছু ঘটবে যা সারাদেশ কাঁপাবে, বান্ধবীকে হাদির হামলাকারী ফয়সাল

রাজধানীর পল্টন এলাকায় শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি চালানোর ঘটনায় তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ঘটনার আগের রাতে শুটার ফয়সাল তার বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমাকে বলেছিলেন, এমন কিছু ঘটবে যা ‘সারাদেশ কাঁপাবে’।

গত শুক্রবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটে পল্টনের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় ওসমান হাদির ওপর গুলি চালানো হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, হামলার পরিকল্পনা বেশ আগে থেকেই হয়েছিল এবং এর জন্য কয়েক কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। 

এ ঘটনায় র‌্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে শুটার ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ শিপু, বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা, মোটরসাইকেলের মালিক মো. কবির, ফয়সালের বাবা-মা এবং আরও অনেকে। উদ্ধার করা হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, ম্যাগাজিন এবং কয়েক কোটি টাকার চেক।

জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ফয়সাল ও তার বান্ধবী মারিয়া সাভারের একটি রিসোর্টে রাত কাটিয়েছিলেন। ওই রাতে ফয়সাল জানান, কাল এমন কিছু হবে, সারাদেশ কাঁপবে। পরদিন তারা সকালেই রিসোর্ট থেকে বের হয়ে ঢাকায় এসে হামলা ঘটায়। হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেট ছিল ভুয়া, যা হামলার পর আসল নম্বর লাগিয়ে পরিবর্তন করা হয়।

তদন্তে মোহাম্মদপুরের এক সাবেক কাউন্সিলরকে হামলার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। অন্তত ২০ সদস্যের একটি সংগঠিত চক্র হত্যাচেষ্টায় জড়িত ছিল। এ ছাড়া মানবপাচার ও অস্ত্র সরবরাহে বিভিন্ন সহযোগীও রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ফয়সালের বাসা থেকে কয়েক কোটি টাকার চেক উদ্ধার হয়েছে। ফয়সালের বাবা-মা ও ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা গ্রেপ্তার হয়েছে। মোটরসাইকেল মালিক কবির সাত দিনের রিমান্ডে, জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হামলার পূর্বপরিকল্পনা ও সহযোগীদের তথ্য দিয়েছেন। হামলার সময় ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে কর্নেল গলির বোনের বাসা থেকে এবং তরুয়ার বিল থেকে। 

ডিএমপি গোয়েন্দা বিভাগের সহযোগিতায় তদন্ত চলছে। গোয়েন্দারা সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের অবস্থান চিহ্নিত করতে মাঠে কাজ করছেন। এ ছাড়া ময়মনসিংহে প্রাইভেটকার চালকসহ সহযোগীদের খোঁজ চলছে, যাদের ধরতে পারলে আরও তথ্য মিলবে বলে আশা করা হচ্ছে। 

ওসমান হাদি হত্যাচেষ্টার ঘটনায় একটি সুসংগঠিত সন্ত্রাসী চক্রের যোগসাজশ ও পূর্বপরিকল্পনা ছিল। হামলার পিছনে অর্থায়ন ও বিভিন্ন সহযোগী সংযুক্ত রয়েছে। মামলার তদন্ত এখন ত্বরান্বিত হচ্ছে এবং পরবর্তী দিনগুলোতে আরও গ্রেপ্তার হতে পারে। 

ইউটি/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
নিজের বিকৃত ছবি ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষুব্ধ শ্রীলীলা Dec 17, 2025
img
হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন, দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Dec 17, 2025
img
হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন: প্রেস উইং Dec 17, 2025
img
ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে জানুয়ারিতে পাকিস্তানে ফেরার পরিকল্পনা দুই ছেলের Dec 17, 2025
img
পৃথক স্মরণসভা নিয়ে এবার মুখ খুললেন দেওল ঘনিষ্ঠ মনোজ দেশাই Dec 17, 2025
img
শিল্পা শেঠির রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ম্যানেজার Dec 17, 2025
img
চব্বিশের ডামি প্রার্থীরা যেন ভোটে অংশ নিতে না পারেন: ইসিকে লিগ্যাল নোটিশ Dec 17, 2025
img
ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল সৌদি আরব Dec 17, 2025
img
কৃষকের ১১৭টি আমগাছ কেটে নিল দুর্বৃত্তরা Dec 17, 2025
img
বিয়ের আগে ব্যাচেলর পার্টি করতে শ্রীলঙ্কায় রাশমিকা! Dec 17, 2025
img

আইপিএল নিলাম

দল পাওয়া নিয়ে নাটকীয়তা, সুযোগ পেয়ে বললেন ‘নতুন জীবন পেলাম’ Dec 17, 2025
img
প্রাক্তন স্ত্রীর কাছে বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ চাইলেন কুমার শানু Dec 17, 2025
img
‘রাজাকার’ বয়ানে হাসিনার পতন, আবারও এই ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে: হেফাজত Dec 17, 2025
img
নিজের বিচার সরাসরি সম্প্রচারের দাবি ইনুর Dec 17, 2025
img
আমার গানের গলার ক্রেডিট শাবনূরকেই দিতে চাই : কনকচাঁপা Dec 17, 2025
img
মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ট্রাভেল পাস চাননি তারেক রহমান Dec 17, 2025
img
চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সরে দাঁড়ালেন পাকিস্তানের প্রধান কোচ Dec 17, 2025
img
দেশ-বিদেশ ঘুরতে প্রস্তুত বাঁধনের থ্রিলার ঘরানার সিনেমা ‘মাস্টার’ Dec 17, 2025
দেশের প্রথম স্বয়ংক্রিয় জ্বালানি বিপণন ডিপোর উদ্বোধন Dec 17, 2025
জোট নয়, আসন সমঝোতা: বদলাচ্ছে বিএনপির কৌশল Dec 17, 2025