গোলের ঠিকানা খুঁজে পেতে প্রথমার্ধ পেরিয়ে গেল আর্সেনালের। তবে একবার ডেডলক ভাঙার পর আর তাদের বেঁধে রাখতে পারল না অ্যাস্টন ভিলা। একের পর এক বল জালে পাঠিয়ে দারুণ এক জয় তুলে নিল মিকেল আর্তেতার দল।
এমিরেটস স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ৪-১ গোলে জিতেছে আর্সেনাল। এই জয়ে লিগ টেবিলে দ্বিতীয় স্থানের চেয়ে ৫ পয়েন্টে এগিয়ে গেল তারা।
প্রিমিয়ার লিগে আগের আট রাউন্ডের সবগুলোয় জয়ী ভিলা এদিন কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেনি। পুরো ম্যাচে পজেশন রাখায় ও আক্রমণে আধিপত্য করে জয়ের আনন্দে ভাসে আর্সেনাল। তাদের গোলগুলো করেন- গাব্রিয়েল মাগালিয়াইস, মার্তিন সুবিমেন্দি, লিয়ান্দ্রো ত্রোসার ও গাব্রিয়েল জেসুস।
১৯ ম্যাচে ১৪ জয় ও ৩ ড্রয়ে আর্সেনালের পয়েন্ট হলো ৪৫। এক ম্যাচ কম খেলে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে ম্যানচেস্টার সিটি। এই হারে শিরোপা লড়াইয়েও কিছুটা পিছিয়ে পড়ল ভিলা। ১৯ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে উনাই এমেরির দল।
গত কয়েক মৌসুমে ভিলার বিপক্ষে বারবার ভুগতে হয়েছে আর্সেনালকে। কয়েকদিন আগে সবশেষ মুখোমুখি লড়াইয়েও দলটির মাঠে শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে হারতে হয় আর্তেতার দলকে। তবে এবার দারুণ পারফরম্যান্সেই ওই ক্ষতে প্রলেপ দিতে পারল শিরোপাপ্রত্যাশীরা।
সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ১১ ম্যাচ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে নামা ভিলাকে কোনো সময়ই স্বরূপে দেখা যায়নি। প্রথম ভালো সুযোগটি অবশ্য তারাই পেয়েছিল। ত্রয়োদশ মিনিটে মাঝমাঠে ভিক্তর ইয়োকেরেশের ভুলে বল পেয়ে আক্রমণে ওঠে দলটি; কিন্তু সতীর্থের পাস পেয়ে ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে ওলি ওয়াটকিন্সের শট লক্ষ্যে থাকেনি।
শুরু থেকেই আক্রমণে কিছুটা এগিয়ে ছিল আর্সেনাল। প্রথমার্ধে গোলের জন্য তারা শটও নেয় বেশি, যদিও খুব বেশি ভীতি ছড়াতে পারেনি তারা। এই সময়ে তাদের উল্লেখযোগ্য দুটি সুযোগই পান ইয়োকেরেশ; কিন্তু একবারও হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি সুইডিশ ফরোয়ার্ড।
বিরতির পর পুনরায় খেলা শুরু হতেই প্রতিপক্ষের ওপর চেপে বসে আর্সেনাল। চার মিনিটের ব্যবধান দুই গোলে এগিয়ে যায় তারা।
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেসের ব্যর্থতায় প্রথম গোল হজম করে ভিলা। ৪৮তম মিনিটে কর্নার থেকে উড়ে আসা বল গ্লাভসে নিতে লাফিয়ে ওঠেন মার্তিনেস, তার সামনে লাফিয়ে ওঠেন গাব্রিয়েলও, আয়ত্ত্বের মধ্যে পেয়েও দলকে বাঁচাতে পারেননি মার্তিনেস, বল তার হাতে লেগে গাব্রিয়েলের শরীরে লেগে গোললাইন পেরিয়ে যায়।
সফরকারীদের পক্ষ থেকে অবশ্য গোলরক্ষককে ফাউল করার দাবি তোলা হয়; তরে ভিএআরের সাহায্যে গোলের বাঁশি বাজান রেফারি। দ্বিতীয় গোলটি নিয়ে অবশ্য কোনো প্রশ্নের অবকাশ নেই। ডি-বক্সে থ্রু পাস বাড়ান মার্টিন ওডেগোর, আর প্রথম ছোঁয়ার শটে আগুয়ান গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সুবিমেন্দি।
৬৫তম মিনিটে ব্যবধান বাড়তে পারত আরও। ওডেগোরের সেই শট অবশ্য ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন মার্তিনেস। একটু পরেই অবশ্য স্কোরলাইন ৩-০ করে জয়ের পথে এগিয়ে যায় আর্সেনাল। ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে বুলেট গতির শটে পোস্ট ঘেঁষে বল জালে পাঠান ত্রোসার। জায়গা থেকে নড়ার সুযোগ পাননি মার্তিনেস।
৭৭তম মিনিটে ইয়োকেরেশকে তুলে জেসুসকে নামান আর্তেতা। চোট কাটিয়ে ফেরার পর ছন্দ খুঁজে পাওয়ার লড়াইয়ে থাকা ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড মাঠে নামার ৫৫ সেকেন্ডে গোল উৎসবে যোগ দেন। ত্রোসারের পাস ডি-বক্সে ধরেই নিখুঁত শটে গোলটি করেন জেসুস।
যোগ করা সময়ে খুব কাছ থেকে বল জালে পাঠিয়ে নিজের জন্মদিন রাঙান ওয়াটকিন্স। সান্ত্বনার গোল নিয়ে মাঠ ছাড়ে অ্যাস্টন ভিলা। দিনের আরেক ম্যাচে, ঘরের মাঠে বোর্নমাউথের সঙ্গে ২-২ ড্র করেছে চেলসি।
১৯ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে আছে চেলসি। তাদের চেয়ে ২ পয়েন্ট বেশি নিয়ে চতুর্থ স্থানে লিভারপুল, একটি ম্যাচ কমও খেলেছে তারা।
এমআর/টিএ