ছবি: সংগৃহীত
গত জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি প্রতিষ্ঠানের নাম থেকে শেখ পরিবারের নাম বাদ দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার আরও ২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বাদ গেল শেখ পরিবারের নাম। নতুন নামও দেওয়া হয়েছে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের।
রোববার (২৭ এপ্রিল) ১৬টি স্কুল, ৩টি স্কুল অ্যাণ্ড কলেজ ও ২টি কলেজসহ ২১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে আদেশ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।বেসরকারি মাধ্যমিক শাখার উপসচিব সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। উপদেষ্টা পরিষদের ১৬ জানুয়ারির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, 'ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের' নামে নামকরণ বাতিলের নীতির আওতায় এই পরিবর্তন করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বেসরকারি মাধ্যমিক শাখার উপসচিব সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলী জানান, আরও কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের কাজ চলছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা ও গণমান্যতা বজায় রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
নাম পরিবর্তন করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে—কক্সবাজারের রামুর 'শেখ হাসিনা জোয়ারিয়ানালা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়' এখন 'জোয়ারিয়ানালা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়', চকরিয়ার 'শেখ রাসেল স্কুল' হয়েছে 'চকরিয়া সিটি মডেল স্কুল'। বরিশালের বাবুগঞ্জে 'শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়' হয়েছে 'রহমতপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়' এবং বাকেরগঞ্জের 'দুখল জয় বাংলা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়' হয়েছে 'দুখল নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়'। একইভাবে পিরোজপুর, রংপুর, দেবীগঞ্জ, পাবনা, ময়মনসিংহ, জামালপুর, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, চুয়াডাঙ্গা, বরগুনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ঢাকার 'রাসেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ' হয়েছে 'আফতাবনগর স্কুল অ্যান্ড কলেজ' এবং টুঙ্গিপাড়ার 'খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ' এখন 'বাঘিরারঘাট স্কুল অ্যান্ড কলেজ' নামে পরিচিত হবে।
এর আগেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৬৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়, ৬টি মেডিকেল কলেজ ও ১৪টি হাসপাতাল থেকে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট নেতাদের নাম সরিয়ে দিয়েছিল। নতুন নামকরণের এই ধারাবাহিকতা বর্তমান সরকারের নিরপেক্ষ প্রশাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা এবং ইতিহাসের পুনর্বিন্যাসের ইঙ্গিত বহন করে।
আরআর/এসএন