কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত 'জুলাই আন্দোলন'-এ আহতদের স্মরণে আয়োজিত জুলাই সমাবেশে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রতিনিধিদের ‘অপমানিত’ করার অভিযোগে সমাবেশ বয়কট এবং তিন সমন্বয়ককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে কুবির একাংশ সমন্বয়ক।
শুক্রবার (১৬ মে) রাত সাড়ে দশটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন কুবির কয়েকজন সমন্বয়ক।
তারা অভিযোগ করেন, একই দিন কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত জুলাই সমাবেশে কুবির সমন্বয়কদের মঞ্চে উঠতে না দেয়াসহ গায়ে হাত তুলে তাদের সরিয়ে দেয়া হয়। বিষয়টিকে চরম অপমানজনক হিসেবে উল্লেখ করে তারা কুমিল্লা মহানগর ও জেলা সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ সময় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা জেলার আহ্বায়ক মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন, কুমিল্লা মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আবু রায়হান এবং কুমিল্লা মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মোহাম্মদ রাশিদুল হাসান।
সম্মেলনে কুবির পক্ষে মো. আবরার ফাহিম বলেন, ১১ জুলাই রাতে প্রথম ৫৪ জনের সমন্বয়ক লিস্ট টিম তৈরি হয়। সেখানে আজকে যারা কুমিল্লাতে রাজত্ব করে বেড়াচ্ছে ভয়ে তারা কেউ নাম দেয়নি। হাসনাত ভাইয়ের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, আপনি যাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে বলেছিলেন, আজকে যারা কুমিল্লায় রাজ করছে, তাদের কি দেখেছিলেন? আজকের জুলাই সমাবেশে কুবির শিক্ষার্থীরা যখন বক্তব্য দিতে যায়, তখন গায়ে হাত তুলে তাদেরকে স্টেজ থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। প্রশাসনের লেজুড়জড়িয়ে আবু রায়হান, সাকিব, রাশেদ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেক হোল্ডারদের নাম বিক্রি করে যে রাজত্ব করে যাচ্ছেন, আমরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় হতে তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।
সমন্বয়ক মো. শোয়াইব হোসেন আলামিন বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামধারী কিছু শিক্ষার্থী, যারা সমন্বয়ক পরিচয় বহন করে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষদের মামলা দিয়ে মামলা বাণিজ্য করছে এবং এর যথেষ্ট প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বহন করে যারা চাঁদাবাজি এবং মামলা বাণিজ্য করেছে তাদের আমরা কঠিনভাবে প্রতিহিত করব। প্রশাসনকে অনুরোধ করবো তারা যেন এই বিষয়টি নিয়ে তদারকি করে। আজকে কুমিল্লায় যে সম্মেলন হয়েছে সেখানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপ্লবী শিক্ষার্থীদের যে অপমান করা হয়েছে এর প্রেক্ষিতে আজকের সম্মেলনকে আমরা বয়কট করলাম।
অন্য আরেক সমন্বয়ক মো. এমরান হোসেন বলেন, জুলাই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিস্ট বিরোধিতা। অথচ কিছু সমন্বয়ক অর্থের বিনিময়ে দোসরদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। কুবির সুনাম যারা নষ্ট করছে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা শক্ত অবস্থানে আছি।
এ সময় অভিযোগ ওঠে, আন্দোলনের নামে মামলা দিয়ে প্রতিপক্ষকে দমন ও অর্থ উপার্জনের কৌশল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সম্মেলনের মাধ্যমে কুবির সমন্বয়করা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, ভবিষ্যতে এসব বিতর্কিত সমন্বয়কদের সঙ্গে তারা কোনো কার্যক্রমে যুক্ত হবেন না এবং তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত হিসেবে গণ্য করবেন।
আরএ/এসএন