ছোট ছেলে ও ছেলের স্ত্রীর হাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮ বারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্র সম্পাদক মুজিবুর রহমান দুলু। তিনি বর্তমানে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানা গেছে।
বড় ছেলে দেশের বাইরে থাকায় ছোট ছেলে ও তার স্ত্রীর সঙ্গেই থাকতেন খ্যাতিমান এই চিত্র সম্পাদক। বড় ছেলের অবর্তমানে সব সম্পত্তি ছোট ছেলের নামে লিখে দিতে দীর্ঘদিন যাবত মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন তার ছোট ছেলে ও ছেলের স্ত্রী।
এরকম অনৈতিক আবদার ও চাপে রাজী না হওয়াতেই এই চিত্র সম্পাদককে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে তার ছোট ছেলে ও ছেলের বউ। এমনটা জানিয়েছেন মুজিবুর রহমান দুলুর প্রতিবেশিরা।
তারা আরো জানিয়েছেন, নির্যাতনের নির্মমতায় তিনি অচেতন হয়ে পড়লে ছেলে ও ছেলের বউ অন্যরুমে চলে যায়। তখন প্রতিবেশিরাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
মুজিবুর রহমান দুলুকে দেখতে ও তার চিকিৎসার খোঁজ খবর নিতে হাসপাতালে যান দীর্ঘদিনের সহকর্মী আবু মুসা দেবু। হাসপাতাল থেকে ফিরে তিনি জানান, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরও অবহেলা আর অনাদরেই আছেন মুজিবুর রহমান দুলু। ছেলে ও ছেলের বউ কাউকেই হাসপাতালে গিয়ে তিনি পাননি।
এ নিয়ে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেন এবং তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে দেশবাসীর কাছে দোয়া চান।
সেই সঙ্গে ছেলে ও ছেলের বউয়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এদিকে হাসপাতালে ভর্তি দুলুর চিকিৎসার ব্যয়ভায় বহন করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এ মুহুর্তে রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন সিনিয়র চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব এফ আই মানিক, এ জে মিন্টু, আবু মুসা দেবুসহ অনেকে।
তারা বলেন, ‘আট বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারপ্রাপ্ত একজন চিত্র সম্পাদক আজ অবহেলিত। অর্থাভাবে সুচিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন তিনি।
এ মুহূর্তে তার সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। এরকম একজন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বের দিকে সরকার সহোযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে এটাই আমাদের চাওয়া। ’
উল্লেখ্য, ‘নয়ন মনি’ ছবির মধ্য দিয়ে নিজের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার শুরু করেন মুজিবুর রহমান দুলু। পরবর্তীতে ‘সুজন সখী’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘অভাগী’, ‘নাত বৌ’, ‘প্রাণ সজনি’, ‘ভাত দে’, ‘তিন কন্যা’, ‘ভেজা চোখ’, ‘সত্যমিথ্যা’, ‘পিতা মাতা সন্তান’, ‘বাংলার বধূ’, ‘মেঘলা আকাশ’, ‘নাগর দোলা’, ‘হাজার বছর ধরে’, ‘৭১ এর মা জননী’সহ প্রায় তিন শতাধিক ছবিতে সম্পাদনার কাজ করেছেন তিনি।
এসএম/টিএ