বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গতকাল মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় সত্য যে, বিষয়টি উদঘাটন করার দায়িত্ব হচ্ছে প্রশাসনের বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। এ ঘটনায় বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের যাদের নাম পাওয়া গেছে, তাদেরকে রাতেই আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপি একটি বৃহৎ পরিবার, কোন ছিদ্র পথে দু’একজন দুষ্কৃতিকারী ঢুকে পড়লে সেটি সব সময় খোঁজ রাখা যায় না। কিন্তু দুষ্কৃতিকারীদের কোনোভাবে যদি চিহ্নিত করা যায়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কার্পণ্য করেন না দল বা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
গত পরশু রাতে পাবনার সুজানগরে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল, সে রাতেই তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকালের যে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে, এর সাথে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। অথচ কোন কোন রাজনৈতিক দল দেখছি, ওই ঘটনাকে রাজনৈতিক রং দেওয়ার চেষ্টা করছে। এখানে দল কোথায় জড়িত? দলের নামধারী কেউ হতে পারে। এটাতো দলের পথ-পদবি নিয়ে সংঘর্ষ হয়নি। দলের মতাদর্শ নিয়ে ঝগড়া হয়নি, ঝগড়া হচ্ছে তাদের ব্যবসা নিয়ে। এগুলো তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আপনারা শুনেছেন, ভাঙারি ব্যবসা নিয়ে ঘটনা। এ ঘটনার সাথে দল হিসেবে কোথায় জড়িত?
যে নিহত হয়েছেন আর যারা ঘাতক, তাদের মধ্যে ঝগড়া চলছে। এটি যুগ যুগ ধরে তারা করে আসছে। এখন পটপরিবর্তন হয়েছে, ওয়ার্ড পর্যায়ের কেউ ব্যবসার সাথে জড়িত হতে পারে, যা মহানগর বা কেন্দ্রীয় নেতারা জানেন না। রোড লেভেলে তো সবকিছু বোঝাও যায় না।
কোনো ধরণের অপকর্ম, সংঘাত বা মানুষ হত্যায় যারা জড়িত, তাদের ছাড় নেই। মাটির গভীরে যায়, সেখান থেকে ধরে এনে এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন, যাতে এ ধরণের ঘটনা না ঘটতে পারে। দু’একটি রাজনৈতিক দল মিছিল করেন, বিএনপির উপর চাপানোর চেষ্টা করেন। আমরা যদি শেখ হাসিনার মতো নিশ্চুপ থাকতাম, অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিতাম, তাদের বহিষ্কার না করতাম, তাহলে এক কথা ছিল। কিন্তু দল অবিলম্বে বিচার ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তাহলে আপনারা মিছিল করছেন কেন? মানে একটা রাজনৈতিক ফায়দা লুটার জন্য।
আমরা আপনাদের অতীত অপকর্ম ভুলে যাইনি। আমরা ভুলে যাইনি, সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের কিভাবে পায়ের রগ কেটেছে, কিভাবে বাসের ভিতর থেকে ছাত্রদল নেতাকে ধরে বিনোদপুর গ্রামে হত্যা করা হয়েছে। আপনাদের নৃশংসতা, আপনাদের ভয়াবহতা মানুষ ভুলে যায়নি। এখনও আপনাদের দেখলে পড়ে সে উপাদানগুলো মানুষ দেয়। আর আপনারা এখন মিছিল করেন। বিএনপির ইতিবাচক দিকগুলো উপেক্ষা করে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছেন, তাতে কোনো লাভ হবে না।
তিনি আজ উত্তরায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমিনুল হক, সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, কেন্দ্রীয় নেতা মাহমুর রহমান সুমন, মহানগর নেতা এসএম জাহাঙ্গীর, কফিলউদ্দিন প্রমুখ।
এফপি/টিএ