তামিল সিনেমার বর্তমান সময়ের অন্যতম প্রতিভাবান নির্মাতা লোকেশ কানাগরাজ তার নতুন ছবি ‘কুলি’-তে আবারও প্রমাণ করলেন কেন তাকে বলা হয় ক্লাস ও ম্যাসের নিখুঁত সেতুবন্ধনকারী। রজনীকান্ত অভিনীত বহুল আলোচিত এই ছবির দ্বিতীয় গান “মনিকা” প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই ভক্তদের মধ্যে উন্মাদনা শুরু হয়েছে। তবে গানটি শুধু একটি ঝলমলে পারফর্ম্যান্স নম্বর নয়, এটি এক অভিজাত শ্রদ্ধাঞ্জলিও বটে — উৎসর্গিত ইতালির কিংবদন্তি অভিনেত্রী মনিকা বেলুচ্চিকে।
এই গানটির মধ্য দিয়ে নির্মাতা লোকেশ একদিকে যেমন তুলে ধরেছেন ইউরোপীয় সৌন্দর্য ও রুচিশীলতার প্রতি সম্মান, অন্যদিকে ফুটিয়ে তুলেছেন ভারতীয় সিনেমার চিরাচরিত গ্ল্যামার আর ভিন্টেজ রোমান্টিকতার মিশেল। অনিরুদ্ধ রবিচন্দর সুরে, তামিল, হিন্দি ও তেলুগু — তিন ভাষাতেই প্রকাশিত হয়েছে গানটি, যেখানে পূজা হেগড়ে হাজির হয়েছেন এক রাজকীয় লুকে। তার নাচের স্টাইল, সাজ-পোশাক ও অভিব্যক্তিতে যেন ধরা পড়েছে মনিকা বেলুচ্চির চলচ্চিত্রিক আভিজাত্য।
মনিকা বেলুচ্চি শুধু তার সৌন্দর্যের জন্য নয়, বরং তার অভিনয়ের গভীরতা ও সাহসী চরিত্র বেছে নেওয়ার জন্য বিশ্ব চলচ্চিত্রে এক অনন্য নাম। তাঁর ‘মালেনা’, ‘স্পেক্টর’, ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’ কিংবা ‘দ্য প্যাশন অব দ্য ক্রাইস্ট’-এর মতো ছবিগুলো আজও স্মরণীয়। আর সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য, মনিকার কন্যার নাম ‘দেবা’, যা কুলি-তে রজনীকান্তের চরিত্রের নামও বটে। এই কাকতালীয় মিল নয়, বরং লোকেশের সূক্ষ্ম পরিকল্পনারই অংশ — যেন ইউরোপীয় আইকনের সঙ্গে ভারতীয় সুপারস্টারকে এক সুরে বাঁধা যায়।
এই গানটির মাধ্যমে রোমাঞ্চকর দৃশ্য, ঝলমলে প্রোডাকশন ডিজাইন ও চিত্রনাট্যের আবহের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। লোকেশ নিজেই আগেই বলেছিলেন, ‘কুলি’র ক্ষেত্রে তারা প্রচলিত টিজার বা ট্রেলারের পথে হাঁটবেন না — বরং গান, চরিত্র ও আবেগ দিয়েই দর্শককে প্রস্তুত করবেন বড় পর্দার জন্য।
আগামী ১৪ আগস্ট ‘কুলি’ মুক্তি পেতে যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী। তার আগেই “মনিকা” গানটি দর্শক-শ্রোতাদের মাঝে সেই প্রত্যাশার আগুন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এটি কেবল একটি গান নয়, বরং সিনেমাটিক স্মৃতির প্রতি এক হৃদয়ছোঁয়া শ্রদ্ধার্ঘ্য, যেটা একমাত্র লোকেশ কানাগরাজ ও রজনীকান্তের মতো শিল্পীরাই ধারণ করতে পারেন।