দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপ সবচেয়ে বড় হুমকির মুখে : ম্যাক্রোঁ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপ সবচেয়ে বড় হুমকির মুখে পড়েছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেছেন, ইউরোপের স্বাধীনতা বর্তমানে এমন এক ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়েছে যেটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আর কখনোই দেখা যায়নি।

সোমবার (১৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্যারিসে ফরাসি সশস্ত্র বাহিনীর উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, “আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছি”, যেখানে বৈশ্বিক রাজনীতি অত্যন্ত জটিল ও অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে।

তিনি জানিয়েছেন, ফ্রান্স আগামী বছর থেকে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়াবে ৩.৫ বিলিয়ন ইউরো এবং ২০২৭ সালের মধ্যে আরও ৩ বিলিয়ন ইউরো বৃদ্ধি পাবে। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যেই ফ্রান্সের সামরিক বাজেট দ্বিগুণ করা হবে, যা পূর্ব পরিকল্পনার চেয়ে তিন বছর আগেই বাস্তবায়ন হবে।

বিবিসি বলছে, ২০১৭ সালে ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল ৩২ বিলিয়ন ইউরো। ম্যাক্রোঁর প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী দুই বছরের মধ্যে বাজেট দাঁড়াবে ৬৪ বিলিয়ন ইউরোতে। তবে এই প্রস্তাব ফরাসি পার্লামেন্টের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

বাস্তিল দিবসের আগের দিন দেওয়া এই বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, “এই পৃথিবীতে স্বাধীন থাকতে হলে, ভয় পাওয়াতে হয়। আর ভয় পাওয়াতে হলে, শক্তিশালী হতে হয়।”

তিনি রাশিয়ার আগ্রাসনকে “সাম্রাজ্যবাদী নীতি” হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “আজকের পৃথিবী আবারও পারমাণবিক শক্তির প্রতিযোগিতা ও বড় বড় সংঘাতের দিকে ফিরে যাচ্ছে।”

সম্প্রতি সামরিক জোট ন্যাটোর মিত্ররা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সামরিক খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ ব্যয় করা হবে, যা আগে ছিল ২ শতাংশ। যুক্তরাজ্যও নিজের প্রতিরক্ষা পর্যালোচনা ঘোষণা করেছে। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি বলেছেন, “এটি মস্কোতে একটি বার্তা পাঠাবে।”

এদিকে, ফরাসি সেনাবাহিনী প্রধান থিয়েরি বারকার্ড গত শুক্রবার বলেন, “রাশিয়া ফ্রান্সকে ইউরোপে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখে”। তিনি সতর্ক করে বলেন, “ইউক্রেনে এখন যা ঘটছে, তার মাধ্যমেই আগামী দিনে ইউরোপের অবস্থান ঠিক হয়ে যাচ্ছে।”

এমআর/টিকে 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বরগুনায় এনসিপির পথসভা, মঞ্চে সারজিসকে দেখে ‘দুলাভাই দুলাভাই’ স্লোগানে মুখর ছাত্র-জনতা Jul 15, 2025
img
'একজন প্লেয়ার হিসেবে সাকিবের বিকল্প নেই' Jul 14, 2025
img
নিজেরা মেঝেতে বসে শহীদদের মা-বাবাকে চেয়ারে বসালেন উপদেষ্টারা! Jul 14, 2025
img
ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা, আটক ২ Jul 14, 2025
img
জার্মান পার্লামেন্টে রংধনু পতাকা উত্তোলন নিষিদ্ধ Jul 14, 2025
img
৫০ ডিগ্রির ভয়াবহ গরমে কাঁপছে আমিরাত Jul 14, 2025
img
উচ্চকক্ষকে দুর্বল করার অপচেষ্টা চলছে: আখতার হোসেন Jul 14, 2025
img
সাগরে নিম্নচাপ: সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সংকেত Jul 14, 2025
img
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্ব সম্প্রদায়েরও বড় দায় আছে : কক্সবাজারে দুই উপদেষ্টা Jul 14, 2025
img
সিআইডি সেজে প্রবাসীর স্বর্ণালংকার লুট, মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণ Jul 14, 2025
img
সালাউদ্দিনকে সরানোর কোনো ভাবনা নেই বিসিবির Jul 14, 2025
img
তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে তারা গণতন্ত্রের শত্রু দাবী ফখরুলের Jul 14, 2025
সাকিব অ্যাভেইলেবল ক্রিকেটার, তার সঙ্গে কথা বলা হবে; বিসিবি সভাপতি বুলবুল Jul 14, 2025
img
মিটফোর্ডের ঘটনা নিয়ে ১০টি পরিকল্পিত অপপ্রচার ও তথ্যভিত্তিক বাস্তবতা: তারেক রহমানের উপদেষ্টার স্ট্যাটাস Jul 14, 2025
img
১০ বছরে লিটন নিজের সামর্থ্যের অর্ধেকও দেখাতে পারেনি, দাবি পাইলটের Jul 14, 2025
img
জগন্নাথে প্রার্থনা শেষে প্রদীপ জ্বালিয়ে আরাধনায় মগ্ন শুভশ্রী-ইশা Jul 14, 2025
img
জনতার বাধার মুখে বিরিয়ানি হাউস উদ্বোধন না করেই ফিরে গেলেন প্রিন্স মামুন Jul 14, 2025
img
পোষ্যের অসুস্থতায় ভেঙে পড়েছেন অনামিকা, ভিডিওতে উঠে এল অভিযোগ Jul 14, 2025
img
ভারতের বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড Jul 14, 2025
img
গামছা দিয়ে মুখ ঢেকে শুটিং লোকেশন ঘুরছেন অরিজিৎ Jul 14, 2025