উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের পর বহু হতাহতকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় পার্শ্ববর্তী লুবানা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে। সেদিনের হৃদয়বিদারক দৃশ্য হয়তো কখনো ভুলতে পারবেন না হাসপাতালটির অ্যাসিস্টেন্ট ম্যানেজার মো. মিরাজুন নবী চঞ্চল। শিশুদের আর্তচিৎকারে সেদিন ভারী হয়ে উঠেছিল হাসপাতালটি।
সোমবার দুপুরের কথা স্মরণ করে মিরাজুন নবী চঞ্চল বলেন, এই হাসপাতালে আমি ১৩ বছর ধরে আছি।
কিন্তু সেদিনের মতো আর কখনও এমন ভয়াবহ দিন দেখিনি আমি। আমার কানে এখনও বাজে- জ্বলে গেল, আমার শরীর জ্বলে গেল, আর কান্নার শব্দ।
তিনি বলেন, ‘বাচ্চাটার নাম জানি না, সুযোগও পাইনি। কিন্তু মনে আছে অ্যাম্বুলেন্স থেকে যখন ইসিজির জন্য বেডে রাখি তখন দেখি আমার হাতে তার পোড়া চামড়া লেগে আছে।
এই দৃশ্য মন থেকে মুছতে পারছি না কোনোভাবেই। এখনও মনে হচ্ছে আমার হাতে বাচ্চাটার পোড়া চামড়া লেগে আছে।’
মঙ্গলবার সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালজুড়ে কেবলই নিস্তব্ধতা। সবাই কাজ করছেন ঠিকই কিন্তু কারো যেন প্রাণ নেই।
সবাই খুবই ক্লান্ত। ওয়ার্ড বয় রুবেল বলেন, দুপুর দেড়টা থেকে শুরু হয় পোড়া বাচ্চাগুলোর হাসপাতালে আসা। প্রথমে দেখে বুঝে উঠতে পারছিলাম না কি করবো। এতটুকু বাচ্চাদের শরীরের নানা জায়গায় পোড়া। তবুও দাঁতে দাঁত চেপে কাজ করে গেছি।
জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. হৃদয় জানান, টানা ১৪ ঘণ্টা ধরে চিকিৎসা দিচ্ছেন। এখন খুবই ক্লান্ত।
জানা গেছে, সোমবার লুবানা হাসপাতালে মোট ২৮ জন রোগী আসেন। এর মধ্যে ডিএমসিতে ১২ জন এবং সিএমএইচ এ ২ জনকে পাঠানো হয়। প্রাথমিক চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ফিরে যান ১২ জন। মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয় ২ জনকে। যাদের মধ্যে একজনের নাম উমায়ের। আরেকজনের নাম জানা যায়নি।
এমকে/এসএন