জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, কিশোরগঞ্জ রাষ্ট্রপতি পেয়েছে বটে, কিন্তু এখানকার মানুষ এখনো শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। হাওরাঞ্চলের এই জেলার মানুষ কষ্ট করে বেঁচে আছে, অথচ মৌলিক অধিকারগুলো তাদের কাছে অধরাই রয়ে গেছে।
শনিবার (২৬ জুলাই) রাতে কিশোরগঞ্জ শহরের পুরান থানায় আয়োজিত এক পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সভার আয়োজন করে এনসিপি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও দেশে এখনো সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হয়নি। সমাজে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি এখনো বেপরোয়া, দুর্নীতি এখনো রাষ্ট্রযন্ত্রের অংশ হয়ে রয়ে গেছে। আমরা বলেছিলাম—শেখ হাসিনার শাসন ব্যবস্থা ও তার তৈরি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র কাঠামো ভেঙে নতুন সরকার, নতুন রাষ্ট্র গড়া হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা নতুন সরকার পেলেও এখনো নতুন দেশ পাইনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে সুপেয় পানির সংকট প্রকট, কৃষকরা সার পাচ্ছে না, ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্কুল আছে, কিন্তু নেই শিক্ষক; হাসপাতাল আছে, কিন্তু ডাক্তার নেই; কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় যুবসমাজ হতাশায় ভুগছে। অনেক বরাদ্দ থাকলেও এখনো বহু সড়ক চলাচলের অনুপযুক্ত। রাষ্ট্রপতি থাকলেও উন্নয়নের ছোঁয়া নেই।
তিনি বলেন, আমরা এমন একটি কিশোরগঞ্জ চাই, যেখানে প্রতিটি শিশু বিদ্যালয়ে যেতে পারবে, প্রতিটি মানুষ পাবে চিকিৎসা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ। যেখানে যাতায়াত ব্যবস্থা হবে উন্নত। আর এই পরিবর্তনের জন্যই আমরা এনসিপির পতাকাতলে এক হচ্ছি।
নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে তরুণরাই ছিল প্রধান চালিকাশক্তি। সেই তরুণদের নেতৃত্বে বাংলাদেশে পরিবর্তনের আশা দেখেছিল জনগণ।
আজও সেই আশার প্রতীক তরুণরাই। আমরা তরুণদের শক্তিতে বিশ্বাস করি, কিশোরগঞ্জের মাটিকে এনসিপির ঘাঁটিতে পরিণত করতে চাই।
তিনি অভিযোগ করেন, গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া এবং আহতদের পরিবার এখনো আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হুমকির মধ্যে আছে। মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বিকার। যারা সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে, তাদেরও চিহ্নিত করে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
সভায় আরো বক্তব্য দেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীনসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা।
এমআর