আহমদ ছফার ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

সাহিত্যিক, সংগঠক ও চিন্তাবিদ আহমদ ছফার ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০১ সালের ২৮ জুলাই প্রয়াত হন বাংলাদেশের চিন্তাজগতে গভীর প্রভাব ফেলা এই বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী লেখক। তার সাহিত্যকর্মে উঠে এসেছে বাংলাদেশি জাতিসত্তার নিরূপণ এবং আত্মঅন্বেষণের বিষয়। উপন্যাস, প্রবন্ধ, কবিতা থেকে শুরু করে সাহিত্যের প্রায় সব শাখায়ই আহমদ ছফা রেখেছেন গভীর ও অনন্য অবদান।

১৯৪৩ সালের ৩০ জুন চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার গাছবাড়িয়া গ্রামে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম হয় আহমদ ছফার। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেন। লেখালেখি শুরু করেন ষাটের দশকে। তাঁর লেখায় মুক্তিকামী মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং সমাজের নানা অসংগতি ও বৈষম্য ফুটে উঠেছে।

সৃষ্টিধর্মী লেখক হিসেবে তিনি গল্প, উপন্যাস, কবিতা, প্রবন্ধ, সমালোচনা, অনুবাদ, শিশুসাহিত্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব দেখান। বিভিন্ন সময়ে সাহিত্য-সাময়িকপত্র সম্পাদনা করেন। বাংলাদেশের কথাসাহিত্যে তিনি এক সফল লেখক। জীবনের বহু বিচিত্র অভিজ্ঞতাকে গল্প-উপন্যাস রচনায় কাজে লাগিয়েছেন।

সূর্য তুমি সাথী (১৯৬৭), উদ্ধার (১৯৭৫), একজন আলী কেনানের উত্থান পতন (১৯৮৯), অলাতচক্র (১৯৯০), ওঙ্কার (১৯৯৩), গাভীবৃত্তান্ত (১৯৯৪), অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী (১৯৯৬), পুষ্পবৃক্ষ ও বিহঙ্গপুরাণ (১৯৯৬) আহমদ ছফার উপন্যাস এবং নিহত নক্ষত্র (১৯৬৯) তার গল্পগ্রন্থ।

কবিতায়ও আহমদ ছফার স্বতন্ত্রতা রয়েছে। জল্লাদ সময়, একটি প্রবীণ বটের কাছে প্রার্থনা, লেনিন ঘুমোবে এবার ইত্যাদি একাধিক কাব্যগ্রন্থের প্রণেতা তিনি।

অনুভূতির প্রত্যক্ষ প্রকাশ, লোকজ ভাষা, পুথিপুরাণের শব্দ ও বাকরীতির প্রকাশ তার কবিতার ধরণ হয়ে উঠেছে। জার্মান কবি গ্যেটের বিখ্যাত কাব্য ফাউস্টের অনুবাদ এবং বার্ট্রান্ড রাসেলের সংশয়ী রচনার বাংলা রূপান্তর আহমদ ছফাকে অনুবাদক হিসেবেও খ্যাতি এনে দিয়েছে।

দেশ, সমাজ ও রাজনীতিবিষয়ক নিবন্ধাবলি ছফাকে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী লেখকের মর্যাদাপূর্ণ আসন দিয়েছে।

২০০১ সালের ২৮ জুলাই অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান আহমদ ছফা। পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদে জানাজা শেষে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। ২০০২ সালে তাকে সাহিত্যে (মরণোত্তর) একুশে পদক দেওয়া হয়।

কেএন/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
এমকেএসের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হচ্ছেন সাকিব আল হাসান Jul 28, 2025
img
ক্যারিবীয় দ্বীপে বাড়ি কিনলেই মিলছে নাগরিকত্ব, ভিড় মার্কিন ধনীদের Jul 28, 2025
img
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ফের হামলার হুমকি ট্রাম্পের Jul 28, 2025
যেসব খাতে সৌদিতে সীমিত হচ্ছে প্রবাসীদের কাজের সুযোগ Jul 28, 2025
মেয়েকে নিতে এসে প্রাণ গেলো মায়ের! শোকে আচ্ছন্ন সোনিয়ার পরিবার Jul 28, 2025
img
আজীবন সম্মাননায় ভূষিত রুনা লায়লা Jul 28, 2025
img
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে নির্বাহী বিভাগের দলীয়করণ থেকে বাঁচাতে হবে : সারজিস Jul 28, 2025
img
গাজায় খাদ্য কেন্দ্র স্থাপনের ঘোষণা ট্রাম্পের Jul 28, 2025
img
হোয়াইটওয়াশ এড়াতে নামার আগেই বড় দুঃসংবাদ ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিবিরে Jul 28, 2025
img
জিম্বাবুয়েকে বড় ব্যবধানে হারাল বাংলাদেশ Jul 28, 2025
img
তারেক রহমানের মধ্যে শহীদ জিয়ার প্রতিচ্ছবি আছে : বিএনপি নেতা খোকন Jul 28, 2025
img
গণ-অভ্যুত্থানের ১৫ মামলায় পুলিশের চার্জশিট Jul 28, 2025
img
ছয় মাসে কুয়েত থেকে ফেরত পাঠানো হলো ১৯ হাজার প্রবাসী Jul 28, 2025
img
কেউ যেন রাষ্ট্রকে পকেটে ঢুকাতে না পারে: জোনায়েদ সাকি Jul 28, 2025
img
ইতিহাসের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি, কেজিতে কেজিতে সোনা বিলানো ছিল যার নেশা Jul 28, 2025
img
৩ আগস্ট আমরা ঢাকায় জড়ো হচ্ছি : নাহিদ ইসলাম Jul 28, 2025
img
ব্রাজিলিয়ান ‘চ্যাম্পিয়ন’ কোচকে দলে নিল বসুন্ধরা কিংস Jul 28, 2025
img
বিজেপিতে হেরে এবার তৃণমূলে শ্রাবন্তী? Jul 28, 2025
img
ঢাকা ছেড়েছে ভারতীয় মেডিকেল টিম Jul 28, 2025
img
সবার জন্য এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়নি : জামায়াত Jul 28, 2025