২৮ জুলাই সোমবার সকাল সাড়ে দশটায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত রিপাবলিক অব কোরিয়ার মান্যবর অ্যাম্বাসেডর মি. পার্ক ইয়ং সিক এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। মান্যবর রাষ্ট্রদূতের সাথে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি চিফ অব মিশন মিস জিন-হি বেক। সাক্ষাৎকারটি অত্যন্ত আন্তরিকতা ও হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়।
জামায়াত আমিরের সাথে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এড. এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি এড. মতিউর রহমান আকন্দ, জামায়াত আমিরের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান।
সাক্ষাৎকার শেষে সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিং-এ অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সম্মানিত জামায়াত আমিরের সঙ্গে মান্যবর কোরিয়ান রাষ্ট্রদূতের অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে দীর্ঘসময় ধরে খোলামেলা দ্বিপাক্ষিক, অর্থনৈতিক, দেশে বিরাজমান সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে চমৎকার আলোচনা হয়েছে।
জামায়াত আমির বাংলাদেশের অগ্রসরমান, উন্নয়নশীল অর্থনীতির দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন যে, একটি সম্ভাবনাময় অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ। টেকসই অর্থনীতির জন্য, আমাদের সাসটেইনেবল ইকোনমিকের জন্য অনেক কিছু করার স্কোপ এবং সোর্স এখানে বিদ্যমান। বিশেষ করে তিনি সারা দুনিয়ায় পোশাক শিল্পে প্রধান রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা বলেছেন।
অধ্যাপক পরওয়ার বলেন, মান্যবর রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে রপ্তানির শুল্ক টেরিফ-এর বিদ্যমান সমস্যাটা দ্রুত সমাধানের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, আমরাও আশাবাদ ব্যক্ত করেছি। আশা করা যায় এটা একটা সহনীয় পর্যায়ে আমাদের জন্য নির্ধারিত হবে।
জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমাদের দেশটা ছোট কিন্তু বিপুল জনসংখ্যা। অনেক সম্ভাবনাময় রিসোর্স, প্রাকৃতিক সবুজ বনভূমি, নদীনালা, সাগর, সমৃদ্ধ মৌসুমী বায়ুর এ দেশে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা সৎ নেতৃত্ব এবং একটি সুষ্ঠু দেশ গঠনের জন্য আগামী নির্বাচনে বিভিন্ন সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক উন্নয়নশীল দেশ গঠনের যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি তা সফল হলে, এ দেশটাকে একটা করাপশন ফ্রি এবং একটি সাসটেইনেবল ইকনমিকের দিকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে আমীরে জামায়াত আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
অধ্যাপক পরওয়ার আরও বলেন, কোরিয়ান এ্যাম্বেসডর আগামী নির্বাচন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সংস্কার পরিস্থিতি ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। সম্মানিত জামায়াত আমির বাংলাদেশের এসব তথ্য আমরা যেটা জানি সে বিষয়টি অবহিত করেছেন। আমরা একটু গুরুত্বপূর্ণ মেজর ইস্যুতে সংস্কার করে একটা ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য সরকারকে সহযোগিতা করে যাচ্ছি। জামায়াতের প্রতিনিধি দল ঐকমত্য কমিশনের নিয়মিত নিরবচ্ছিন্নভাবে সেখানে সময় দিচ্ছেন। আমরা আশাকরি একটা ঐকমত্যের ভিত্তিতে আগামী নির্বাচনে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচেনের পরিবেশ তৈরী হবে ইনশাআল্লাহ।
নির্বাচনের দিনক্ষণ সম্পর্কে মান্যবর রাষ্ট্রদূত জানতে চাইলে জামায়াত আমির বলেন, রমজানের আগে নির্বাচনের প্রস্তাব আমাদের পক্ষ থেকেই দেয়া হয়েছিলো। সে বিষয়গুলো খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনের পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে সম্মানিত অ্যাম্বাসেডরকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতির পক্ষে মত দিয়েছে। এতে কালো টাকা, পেশিশক্তি ও মনোনয়ন বাণিজ্য থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে এবং কোয়ালিটি সম্পন্ন পার্লামেন্ট ও ভোটারদের যথাযথ মূল্যায়ন করতে গেলে পিআর পদ্ধতি হচ্ছে যুগোপযোগী পদ্ধতি। এ সম্পর্কে ঘরোয়া আলোচনা হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও কোরিয়ার দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি, বিনিয়োগ ভবিষ্যতে আরও জোরদার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
এসএন