ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দাখিল করেছেন উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের মধু মন্ডলের ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা আবুল হাসান প্রামানিক। ইউএনওর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, পক্ষপাতমূলক আচরণ এবং দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
লিখিত অভিযোগের অনুলিপি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও রাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা সংস্থাকেও পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবুল হাসান প্রামানিক।
দুদককে দেওয়া লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, সদরপুর উপজেলার ইউএনও জাকিয়া সুলতানা আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় আদালতের আদেশ ও আইনি প্রক্রিয়া উপেক্ষা করে পলাশ মন্ডল নামের এক ব্যক্তির পক্ষে ক্ষমতার অপব্যবহার, পক্ষপাতমূলক ভূমিকা এবং প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ করেছেন।
ইউএনও সরকারি সার্ভেয়ারের মাধ্যমে জমি পরিমাপ না করেই একতরফাভাবে মাদরাসার নির্মাণাধীন ভবনসহ সম্পূর্ণ জমি পলাশ চন্দ্র মন্ডলের নামে বুঝিয়ে দিয়েছেন এবং তারকাটা দিয়ে ঘিরে দিয়েছেন।
অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, পলাশ চন্দ্র মন্ডল অতীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে দলীয় দায়িত্বে ছিলেন এবং নানাবিধ সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন। এমনকি ২০২৪ সালে কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় সদরপুর থানায় হামলা ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হন এবং জেলও খাটেন। সরেজমিনে তদন্ত করে ইউএনওর আচরণ ও সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহারের বিষয়ে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানানো হয়েছে অভিযোগে।
অভিযোগকারী আবুল হাসান বলেন, আমি আদালতের রায়ের অপেক্ষায় ছিলাম। অথচ ইউএনও আইনগত প্রক্রিয়া উপেক্ষা করে একজন দণ্ডিত রাজনৈতিক সুবিধাভোগীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এখন আমি ও আমার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছি।
এ বিষয়ে পলাশ চন্দ্র মন্ডল বলেন, ‘ওই অংশে ৮২ শতাংশ জমির মধ্যে আমি কিনেছি সাড়ে ৬১ শতাংশ।
বাকীটা ওদের।’ পুরো ৮২ শতাংশ কেন দখল করলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদেরটা তারা ভোগ করবেন, আমারটা আমি।’
বিসিএস ৩৬তম ব্যাচের কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর ইউএনও হিসাবে সদরপুরে যোগদান করেন। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার পক্ষে কোনো বক্তব্য দেওয়া সম্ভব নয়। আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান।’
ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সোহরাব হোসেন বলেন, ইউএনও সদরপুরের বিষয়ে একটি অভিযোগ হাতে পেয়েছি। অভিযোগটি এডিসি রেভিনিউয়ের কাছে দেওয়া হয়েছে, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবসা নেওয়া হবে।
টিকে/