জুলাই ঘোষণাপত্রকে কেন্দ্র করে অন্তর্বর্তী সরকারের বিপরীতমুখী অবস্থানে দাঁড়িয়েছে ইসলামী রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো। ইসলামপন্থিদের অংশগ্রহণ আছে এমন একাধিক ফ্যাসিবাদবিরোধী অবদানের উল্লেখ নেই অভিযোগ তুলে ঘোষণাপত্র সংশোধনের দাবি তুলেছেন তারা৷ ঘোষণাপত্র সার্বজনীন করার আহ্বান তাদের।
অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। যেখানে জুলাই আন্দোলনের স্মৃতি, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং বিপ্লবের চেতনার নানা দিক সংরক্ষণের পাশাপাশি উঠে এসেছে দেশের গণমানুষের দীর্ঘ সংগ্রামের টুকরো ইতিহাস।
ঘোষণাপত্র পাঠের পরপরই রাজনীতির মাঠ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি নানারকম প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো। শুরু থেকেই সরকারের প্রতি আস্থা প্রকাশ করলেও ঘোষণাপত্র পাঠের পর থেকে চিত্র অনেকটাই ভিন্ন।
গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও ফ্যাসিবাদবিরোধী আত্মদানের অনেক ঘটনাই এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে জুলাই ঘোষণাপত্রে এমন মন্তব্য করে কিছু ক্ষেত্রে ইসলামপন্থিদের খাটো করার অভিযোগও করেছেন নেতারা।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ইতিহাসের কিছু অংশ সেখানে সন্নিবেশিত করা হয়নি। যেটা হলে পূর্ণাঙ্গ হতো।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রে ৪৭ এর কথা আসেনি, শাপলাচত্বর ও পিলখানা হত্যাকাণ্ডের কথাও আসেনি। আমাদের বাংলাদেশে যেসব ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছিল, সেটা সেখানে আসেনি।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন,ঐতিহাসিক জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পৃক্ত করলে এ ঘোষণাপত্রের সঙ্গে আর কয়টি লাইন, কয়টি বাক্য বাড়ত? ঘোষণাপত্রে ইসলামপন্থিদের একটু লুকানো এটা আমি মনে করি উচিত হয়নি।
নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের ভাবনার বহিঃপ্রকাশ ঘোষণাপত্রে ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ।
ফয়জুল বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ আমরা মনে করি, সমস্ত দলের প্রতি খেয়াল রেখে এটি করা হয়নি। কোনো একটি দলের বিশেষ প্রভাবের ভিত্তিতেই মনে হয় যেন এটা করা হয়েছে।
তাহের বলেন, কোনো একটি ফিলোসফির সঙ্গে মনে হয় এক ধরনের কম্প্রোমাইজ আছে বা বোঝাপড়া আছে। আর কোনো একটা ফিলোসফি কেটে দিয়েছে। এখানেই আমরা বলছি যে, এটা পূর্ণাঙ্গ হয়নি।
রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি হেফাজতে ইসলামসহ অন্যান্য অরাজনৈতিক ইসলামী সংগঠনগুলোও দাবি জানিয়েছে ঘোষণাপত্র সংশোধনের।
এফপি/এসএন