রাজউকের প্লট বরাদ্দের জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ওপর চাপ প্রয়োগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক বলে আদালতে জানান দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন।
বুধবার (১৩ আগস্ট) ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. রবিউল আলমের আদালত আলাদা তিন মামলার বাদী দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন এসব তথ্য জানান।
এদিকে সকালে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট দুর্নীতির অভিযোগে করা আলাদা তিন মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা এবং তার দুই সন্তানসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
সাক্ষ্যগ্রহণে দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন বলেন,
শেখ হাসিনা তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের বোন রেহানাকে প্লট বরাদ্দের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
এছাড়াও শেখ হাসিনা ও তার ছেলেমেয়ের নামে প্লট বরাদ্দের বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিক জানতে পেরে নিজের নামেও একই জায়গায় প্লট বরাদ্দের জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ওপর চাপ প্রয়োগ করেন বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন,
শেখ রেহানা, টিউলিপ সিদ্দিক ও রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক রাজউকের নির্ধারিত ফর্মে কোনো আবেদন করেননি। এছাড়াও রাজধানীতে একাধিক স্থাবর সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও শেখ রেহানা ও রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক রাজউকের আবাসন নীতিমালা লঙ্ঘন করে প্লট বরাদ্দ নেন।
এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম জানিয়েছিলেন, সাক্ষ্য দেয়ার জন্য মামলার বাদি দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া ও সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসানকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করা হয়।
গত ৩১ জুলাই এসব মামলায় চার্জগঠন করে বিচার শুরু আদেশ দেন আদালত। চার্জগঠন শুনানির সময়ে আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। আলাদা তিন মামলায় শেখ রেহানা, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, শেখ হাসিনাসহ ১৭ জন, আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, শেখ হাসিনাসহ ১৮ এবং রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়। তবে আজ ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হচ্ছে।
গত ২০ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ ও ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ আদালতে তিনটি করে মোট ছয়টি মামলা বিচারের জন্য পাঠানো হয়।
মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছে, জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।
প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ৬ মামলা দায়ের করে দুদক। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়। সম্প্রতি সবগুলো মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। গত ১১ আগস্ট তিন মামলার বাদীরা সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এসএন