জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পুলিশ ও পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে এই ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।
বিভুরঞ্জনের শরীরের বাইরে ও ভেতরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্ত সম্পন্নকারী মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) শেখ মো. এহসানুল ইসলাম। তিনি আরও বলেন, ‘লাশটি পানি থেকে এসেছে। লাশ হালকা পচনশীল ছিল। আমরা যত দূর দেখেছি, শরীরের বাইরে ও ভেতরে আঘাতের চিহ্ন পেলাম না। তারপরও শরীরের কিছু অংশ-দাঁত, চুল, লিভার, কিডনি, পাকস্থলী-নিয়েছি। এগুলো ফ্রিজিং করে ঢাকায় পাঠাচ্ছি।
প্রতিবেদন আসার পরে আমরা চূড়ান্ত মন্তব্য দিতে পারব।’
৭১ বছর বয়সী বিভুরঞ্জন সরকার দৈনিক আজকের পত্রিকা-তে জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে বের হওয়ার পর তিনি নিখোঁজ হন। ওইদিন রাতেই পরিবারের পক্ষ থেকে রমনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
এরপর শুক্রবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বলাকির চর এলাকায় মেঘনা নদীতে একটি ভাসমান মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। তারা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করলে, কলাগাছিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে এবং সন্ধ্যায় মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
পরবর্তীতে মরদেহের ছবি ঢাকার রমনা থানায় পাঠানো হলে বিভুরঞ্জন সরকারের পরিবারের সদস্যরা তা শনাক্ত করেন। শনিবার দুপুরে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শেষে মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বিভুরঞ্জনের ছোট ভাই চিররঞ্জন সরকার, ছেলে ঋত সরকার, সহকর্মী ও স্বজনরা মরদেহ গ্রহণ করেন। পরে ফ্রিজিং গাড়িতে করে মরদেহ রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসায় নেয়া হয়। সেখানে পরিবারের সদস্যরা শেষবারের মতো তাকে দেখার পর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে সবুজবাগের বরদেশ্বরী কালীমন্দির ও শ্মশানে।
চিররঞ্জন সরকার বলেন, ‘আমরা এখন লাশের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় মনোযোগ দিচ্ছি। এরপর পরিবারের সদস্যরা বসে আলোচনা করে মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
এ বিষয়ে কলাগাছিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোহাম্মদ সালেহ আহমেদ জানান, ‘এই ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হবে। ময়নাতদন্তে কোনো অসঙ্গতি পাওয়া গেলে পরবর্তীতে সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
টিকে/