মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদী থেকে আবারও মাছ ধরার ট্রলারসহ বাংলাদেশি ছয় জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে।
সাগর থেকে মাছ শিকার শেষে টেকনাফ ফেরার পথে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে শাহপরীর দ্বীপের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জেলেদের মাঝির আব্দুল হাফেজ জানা গেলেও বাকি পাঁচজনের নাম-ঠিকানা জানা যায়নি।
এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ঘাট ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম।
ট্রলারমালিক ও জেলেদের দাবি, টানা চারদিনে ৩৯ জেলে আরাকান আর্মির হাতে অপহরণের শিকার হয়েছেন। আর ৫ আগস্ট থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত ২১ দিনে সাতটি ট্রলার-নৌকাসহ ৪৬ জেলেকে ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। তাদের কাউকে এখনো ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথের শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব-দক্ষিণে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা সংলগ্ন নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় বিজিবি ও কোস্টগার্ডের নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানান তারা।
টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ঘাট ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, `ট্রলারটির মালিক টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যংপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলম। নৌযানটিতে ছয়জন মাঝিমাল্লা ছিলেন। তবে মাঝি আব্দুল হাফেজ বাকি পাঁচজন জেলেদের নাম জানাতে পারেননি।'
ওই ট্রলারের মাঝি আব্দুল হাফেজ সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে বলে জানান আবুল কালাম। তিনি বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকার শেষে টেকনাফে ফেরার পথে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব-দক্ষিণে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা সংলগ্ন নাইক্ষ্যংদিয়া নামক এলাকায় পৌঁছালে আগে থেকেই ওৎঁপেতে থাকা আরাকান আর্মির সদস্যরা স্পিডবোটে জেলেদের ধাওয়া করে আটক করেন। পরে তাদের মিয়ানমারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে আবুল কালামকে জানিয়েছেন ট্রলারের মাঝি আব্দুল হাফেজ। এরপর থেকে ট্রলারের মাঝিমাল্লাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু প্রতিদিন আরাকান আর্মির সদস্যরা বঙ্গোপসাগর থেকে ফেরার পথে বাংলাদেশি ট্রলারসহ জেলেদের অস্ত্রেরমুখে জিম্মি করে ধরে নিয়ে যাচ্ছে।’
গত চারদিনে পাঁচটি ট্রলারসহ ৩৯ জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে ট্রলার মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে আরাকান আর্মি ২৫০ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। এর মধ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় কয়েক দফায় ১৮৯ জন জেলে এবং ২৭টি ট্রলার-নৌকা ফেরত আনা হয়েছে।
এমআর/এসএন