ভারতের লাদাখ এখন উত্তপ্ত জনপদে পরিণত হয়েছে। পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ও সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে সেখানে ছড়িয়ে পড়েছে ‘জেনজি আন্দোলন’। নেতৃত্ব দিচ্ছেন পরিবেশকর্মী, শিক্ষাবিদ ও প্রকৌশলী সোনম ওয়াংচুক, যার জীবন কাহিনী থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই বলিউডের জনপ্রিয় ছবি থ্রি ইডিয়টস-এ আমির খানের র্যাঞ্চো চরিত্রটি নির্মিত হয়েছিল।
শুক্রবার লেহ শহর থেকে ওয়াংচুককে আটক করে পুলিশ। এর আগে কয়েকদিন ধরে অনশন ও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চললেও পরে তা সহিংসতায় রূপ নেয়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারান অন্তত চারজন, আহত হন পঞ্চাশের বেশি মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে কারফিউ জারি ও ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ওয়াংচুকের অভিযোগ, পুলিশ বিনা উসকানিতে গুলি চালিয়েছে; অন্যদিকে সরকারের দাবি, ওয়াংচুকের বক্তব্যে আন্দোলনকারীরা সহিংস হয়ে ওঠে।
২০১৯ সালে অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের পর লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হয়। শুরুতে সমর্থন থাকলেও পরে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। ওয়াংচুক ও স্থানীয়দের দাবি, বাইরের লোকেরা জমি ও চাকরির দখল নিচ্ছে, হুমকির মুখে পড়ছে সংস্কৃতি ও পরিবেশ। তাই তাদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য— ষষ্ঠ তফসিলের আওতায় এনে সাংবিধানিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
শিক্ষা ও পরিবেশে বিশেষ অবদানের জন্য ওয়াংচুক ২০১৮ সালে র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার পান। তার প্রতিষ্ঠিত স্টুডেন্টস এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্ট অব লাদাখ (SECMOL) স্থানীয় শিক্ষায় নতুন দিগন্ত খুলে দেয়।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ওয়াংচুকের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীতাসহ একাধিক মামলা হয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সীমান্তবর্তী লাদাখে এই বিক্ষোভ ভারতের জন্য গুরুতর নিরাপত্তা সংকট ডেকে আনতে পারে।
এমআর/টিকে