পেরুতে গণবিক্ষোভ এবং ক্রমবর্ধমান অপরাধ দমাতে রাজধানী লিমায় জরুরি অবস্থা জারি করেছেন দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হোসে জেরি।
মঙ্গলবার (২১শে সেপ্টেম্বর) এক টেলিভিশন ভাষণে জেরি ঘোষণা দেন, এই জরুরি অবস্থা ৩০ দিন স্থায়ী হবে। এই পদক্ষেপের ফলে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের অধিকারসহ বিভিন্ন সাংবিধানিক অধিকার স্থগিত করা হয়েছে। সরকার এখন রাস্তায় টহল দেওয়ার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে পারবে এবং সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ করতে পারবে।
পেরু সপ্তাহব্যাপী দুর্নীতি ও সংগঠিত অপরাধের বিরুদ্ধে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল, যার নেতৃত্বে রয়েছে তরুণ অ্যাক্টিভিস্টরা। বিশেষ করে, গত বৃহস্পতিবার জেরির পদত্যাগের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়। এতে একজন নিহত এবং পুলিশ ও সাংবাদিকসহ প্রায় ১০০ জন আহত হন। তবে প্রেসিডেন্ট জেরি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না।
জরুরি অবস্থা ঘোষণার পেছনে অপরাধ বৃদ্ধিও একটি বড় কারণ। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুলিশ ১,৬৯০টি হত্যাকাণ্ডের খবর দিয়েছে, যা ২০২৪ সালের একই সময়ে ছিল ১,৫০২টি। এছাড়া এ বছর চাঁদাবাজির ঘটনা ৩০ শতাংশ বেড়ে আনুমানিক ১৮,০০০-এ পৌঁছেছে।
প্রেসিডেন্ট জেরি অপরাধ দমনে 'প্রতিরক্ষা থেকে আক্রমণে' যাওয়ার একটি নতুন পদ্ধতির পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'কথায় নয়, কাজেই যুদ্ধ জেতা যায়।'
উল্লেখ্য, অপরাধ দমনে ব্যর্থতার অভিযোগে পেরুর কংগ্রেস গত ১০ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট দিনা বোলুয়ার্তেকে অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারণ করে। এরপর পার্লামেন্টের স্পিকার জেরি তার স্থলাভিষিক্ত হন এবং আগামী বছরের জুলাই পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
এর আগে, মার্চ মাসে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বোলুয়ার্তেও ৩০ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন, কিন্তু তা অপরাধ কমাতে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি।
সূত্র: আল জাজিরা
কেএন/টিকে