হিজাব-বোরকা নিয়ে বিতর্কিত পোস্টের বিষয়ে আরেকটি পোস্ট দিয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন। সেখানে নিজের ভুল স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনি। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে ওই পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
নিজেকে হতাশাগ্রস্ত দাবি করে অধ্যাপক আ-আল মামুন লিখেছেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনমুহূর্তে স্বপ্ন দেখেছিলাম সম্পূর্ণ নতুন এক বাংলাদেশের। কিন্তু এরপর বহু ঘটনা ঘটেছে, যেমন চেয়েছিলাম, বাংলাদেশ সেদিকে হাঁটেনি। ব্যাপক হতাশা কাজ করে আমার মধ্যে। হতাশাগ্রস্ত আমি ঝোঁকের বশে এমন কিছু লিখি, যা লেখা উচিত হয়নি। তা আমি লিখতে চাইওনি। মিস রিডিং হবে বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে আমি পোস্টটি সরিয়ে নেই।
নিজের অবস্থান তুলে ধরে তিনি লিখেছেন, আমি এক এগারোর সরকারের বিরুদ্ধে মিছিল করে জেল খেটেছি। ২০১৩ সাল থেকে নানাভাবে ক্যাম্পাসে ও ক্যাম্পাসের বাইরে জুলুম-অত্যাচারের ক্রিটিক করেছি ২০২৪ পর্যন্ত, ফেসবুকে এবং বইপত্রে। সেসব ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। জুলাই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলাম। শিক্ষক হিসেবে আন্দোলনকারীদের আগলে রেখেছিলাম।
পোশাকের স্বাধীনতা বিষয়ে অধ্যাপক আ-আল মামুন লিখেছেন, পোশাক বিষয়ে আমার ভাবনা পরিষ্কার, পোশাকের কারণে আমি কাউকে বড় বা ছোট করে দেখি না। ‘হিজাব’ ডিফেন্ড করার মতো অনেক পোস্ট পাবেন আমার। এ শিক্ষা আমার ‘সন্ত্রাসবিরোধী অনন্ত যুদ্ধ’র ক্রিটিক করতে গিয়েই হয়েছে। ফলে আপনারা যা ভাবছেন, সে রকম কোনো উপহাস বা তাচ্ছিল্য আমি করি না। এক মুহূর্তে পোস্ট করে পারসোনালাইজ করেছিলাম, এ নিয়ে আরও ভাবনা-চিন্তা করার জন্য। কিন্তু সেই মুহূর্তেই কেউ এ পোস্ট স্ক্রিনশট নিয়ে ছড়িয়ে দেয়। খেয়াল করলে দেখবেন, ওই পোস্টে কোনো লাইক, কমেন্ট, শেয়ার কিছু নেই, কোনো ইন্টারঅ্যাকশন নেই!
তিনি আরও লিখেছেন, তারপরও কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে আমি দুঃখিত। আমি সবসময়ই শিক্ষার্থীদের জন্য শুভকামনা করি। আশা করি বিভ্রান্তিকর উত্তেজনা এবার প্রশমিত হবে। আমি চাই না, আমাকে কেন্দ্র করে যে উত্তেজনা ছড়িয়েছে, তার প্রেক্ষিতে আমার বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী কোনো প্রকার অসুবিধার সম্মুখীন হোক বা অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কলহে জড়াক! শুভকামনা সবার জন্য।
উল্লেখ্য, ওই পোস্টে রাবির ছাত্রীদের দুটি হল সংসদের নবনির্বাচিত প্রতিনিধিদের শপথ গ্রহণের সময়কার ছবি যুক্ত করে ক্যাপশনে অধ্যাপক আ-আল মামুন লিখেছিলেন, এই ব্যক্তিগত স্বাধীনতা (বোরকা-হিজাব পরা) আমি এন্ডর্স করছি। কাল আমি এ রকম ব্যক্তিগত স্বাধীনতা পরে ও হাতে নিয়ে ক্লাসে যাব। পরব টু-কোয়াটার, আর হাতে থাকবে মদের বোতল। মদ তো ড্রাগ না! মদ পান করার লাইসেন্সও আমার আছে! শিবির আইসেন, সাংবাদিকরাও আইসেন!
ইএ/টিকে