সীমান্তবর্তী ১০ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অমিত শাহর জরুরি বৈঠক

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার যুদ্ধের মধ্যে সীমান্তবর্তী ১০ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নেপাল এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্তবর্তী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা এ বৈঠকে অংশ নেন।
বুধবার (০৭ মে) ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের মুখ‍্যসচিব মনোজ পন্থ এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারও এ বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়া জম্মু-কাশ্মীর, পাঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাট, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, বিহার এবং সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী, ডিজি এবং সচিবরাও বৈঠকে ছিলেন।

সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সাধারণ নাগরিকদের সরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন অমিত শাহ। তিনি জানান, সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তাই ভারতের কাছে অগ্রাধিকার।
সীমান্তবর্তী ১০ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অমিত শাহর জরুরি বৈঠক

সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) প্রধান দলজিৎ সিংহ, জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর (উপরাজ্যপাল) মনোজ সিন্‌হা এবং মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন অমিত শাহ। তিনি পরিস্থিতি নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত পাকিস্তানের ৬টি এলাকায় ২৪টি বেসামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য অস্ত্রে হামলা চালিয়েছে। এসব হামলা পাঞ্জাব প্রদেশের ভাওয়ালপুরের আহমেদপুর শারকিয়া, মুরিদকে, শিয়ালকোট, শকরগড় এবং পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের কোটলি ও মুজাফফরাবাদে হয়।

জেনারেল শরীফ জানান, বাহাওয়ালপুরের আহমেদপুর পূর্বাঞ্চলে ১৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছে দুই-তিন বছর বয়সী একটি শিশু মেয়ে, সাতজন নারী ও চারজন পুরুষ। আহতদের মধ্যে রয়েছেন ৯ নারী ও ২৮ পুরুষ।

মুজাফফরাবাদের কাছে বিলাল মসজিদে চালানো হামলায় তিনজন নিহত হন, আহত হন এক মেয়ে ও এক ছেলে। কোটলির আব্বাস মসজিদে হামলায় নিহত হন ১৬ বছর বয়সী এক মেয়ে ও ১৮ বছর বয়সী এক ছেলে, আহত হন এক মা ও তার মেয়ে।
ভারতের হামলার পর পাঞ্জাব প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং হাসপাতাল ও অন্যান্য জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শরিফ।

এদিকে পাকিস্তান দাবি করেছে, তাদের পাল্টা হামলায় ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ও একটি যুদ্ধ ড্রোন ভূপাতিত হয়েছে। আইএসপিআরের ডিজি বলেন, শত্রুর আগ্রাসনের জবাবে প্রতিরক্ষামূলকভাবে আমরা তিনটি রাফায়েল জেট, একটি মিগ-২৯, একটি এসইউ বিমান এবং একটি হেরন যুদ্ধ ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছি।

তিনি জানান, জম্মু, আখনুর ও শ্রীনগরের সাধারণ এলাকাগুলোতে একটি করে বিমান এবং অবন্তীপুরে দুটি বিমান গুলি করে নামানো হয়েছে।

ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সীমান্তে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গোলাবর্ষণে অন্তত ১০ ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন। পরমাণু শক্তিধর দু-দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান এই উত্তেজনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।

এসএন 

Share this news on: