প্রতিটি সিগারেট ধূমপায়ী একজন পুরুষের জীবন থেকে গড়ে ১৭ মিনিট ও নারীর জীবন থেকে ২২ মিনিট করে হরণ করে—এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউসিএল) সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। অর্থাৎ, গড় হিসেবে একজন ধূমপায়ী প্রতিটি সিগারেট পানে হারাচ্ছেন ২০ মিনিট জীবনকাল।
এই গবেষণার স্বীকৃতি দিয়ে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নতুন বছরের শুরুতেই ধূমপায়ীদের উচিত ধূমপান ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়া।
গবেষণার সহ-লেখক ও ইউসিএলের প্রিন্সিপাল রিসার্চ ফেলো ড. সারাহ জ্যাকসন ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, “ধূমপায়ীরা যত বছর বাঁচেন, প্রায় তত বছরই তারা ধূমপানের কারণে হারান। এটি শুধু আয়ু হ্রাস করে না, বরং জীবনের শেষভাগকে দীর্ঘস্থায়ী রোগব্যাধিতে পরিণত করে।”
তিনি আরও জানান, “ধূমপানের ক্ষতি সম্পর্কে প্রায় সবাই জানলেও, এর প্রভাব কতটা সুদূরপ্রসারী—তা অনেকেরই অজানা। একজন নিয়মিত ধূমপায়ী ধূমপান চালিয়ে গেলে গড়ে কমপক্ষে ১০ বছর আয়ু হারান। এবং এই ১০ বছর হলো জীবনের সবচেয়ে কর্মক্ষম, সুস্থ সময়।”
ড. সারাহ জ্যাকসন বলেন, “আপনি যত দ্রুত ধূমপান ত্যাগ করবেন, মৃত্যুর দিক থেকে সরে আসার সম্ভাবনাও ততটাই বেড়ে যাবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কেউ ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ধূমপান ছেড়ে দেন, তাহলে ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই তাদের আয়ু বেড়ে যেতে পারে এক সপ্তাহ। আর পুরো বছর ধূমপানমুক্ত থাকলে জীবনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে বাড়তি ৫০ দিন।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ধূমপানকে জনস্বাস্থ্যের জন্য মানব সভ্যতার সবচেয়ে বড় হুমকি বলে ঘোষণা করেছে। তাদের তথ্যমতে, প্রতি বছর বিশ্বে ধূমপানজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন প্রায় ৯৩ লাখ মানুষ, যার মধ্যে ৮০ লাখ সরাসরি ধূমপায়ী এবং ১৩ লাখ প্যাসিভ স্মোকার—যারা ধূমপায়ীদের আশেপাশে থাকায় পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন।
সূত্র : গার্ডিয়ান, NDTV ওয়ার্ল্ড
টিকে/টিএ