বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, গোপালগঞ্জে যা ঘটেছে, সেটা অনাকাঙিক্ষত। পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পলায়নের পর গোপালগঞ্জে আজ এনসিপির যে পদযাত্রা, গোপালগঞ্জের যারা এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তাদের ভূমিকা কতটুকু? মিডিয়াতে দেখিছি এনসিপির নেতারা বারবার বলছে, আমাদেরকে আশ্বস্ত করা হয়েছে এ ধরনের কোনো ঘটনা ওখানে ঘটবে না, সবকিছু নিয়ন্ত্রণ আছে। এখানে মনে হয়, একটা ষড়যন্ত্র আছে যে আসলে এই ঘটনা ঘটবে। এটা প্রশাসন জানতেন অথবা এই ধরনের একটা পরিস্থিতি তৈরি হলে বাংলাদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে একটা অশান্ত পরিবেশ তৈরি হবে যা কোনো মহলের বিশেষ পরিকল্পনা- সেটা বাস্তবায়ন হবে।
যে ঘটনাটা ঘটেছে আজকে, এনসিপির ওপর সমাবেশ পরবর্তী হামলা হয়েছে- এটা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না।
বুধবার (১৬ জুলাই) দেশের এক টিভি চ্যানেলের টক শোতে তিনি এসব কথা বলেন।
এবিএম মোশাররফ হোসেন বলেন, যেকোনো গণতান্ত্রিক দেশে আমি আমার কথা বলব, আপনি আপনার কথা বলবেন এবং সেটা শোনার মতো মানসিক ধৈর্য আমাদের থাকতে হবে। যার জন্য আমরা বলছি, একটা নতুন বাংলাদেশ তৈরি করতে চাই।
নতুন গণতান্ত্রিক পরিবেশ আমরা তৈরি করতে চাই। বাংলাদেশটাকে মেরামত করতে চাই। কিন্তু আমাদের মনোজগতে যদি সেই আগের ফ্যাসিস্টের মতো অবস্থা থাকে, যেমন- খবরে স্পষ্ট বলেছে একজনের নাম ধরে যে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে হামলা করা হয়েছে। নিশ্চয়ই ওই নেতা ওখানে ছিলেন।
তাহলে প্রশাসনের তো আগে থেকে একটা মেজারমেন্ট নেওয়া উচিত ছিল। প্রটেকশনের ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। কিন্তু প্রশাসন তো সেটা করেনি। বরং এনসির নেতারা বারবার বলেছে, আমরা দেখেছি যে প্রশাসন, পুলিশ নিষ্ক্রিয়, সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয়। আমাদেরকে হামলায় তাদেরকে সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি মনে করি, এনসিপিও আগে থেকে তাদের আরো সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল। কারণ এর আগে একবার সেনাবাহিনীর উপরে কিন্তু গোপালগঞ্জে হামলা হয়েছিল ৫ তারিখের পর। গোপালগঞ্জে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও খুব জটিল একটা সমীকরণ। ওখানে একটা মাত্র রাস্তা। সুতরাং এই সকল ক্ষেত্রে আমি মনে হয় এনসিপি যে প্রোগ্রামগুলো এখন করছে, তাদেরও অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে আগামী দিনে প্রোগ্রাম করতে হবে।
বিএনপির এ প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক বলেন, এই গণতান্ত্রিক শক্তির উপর আঘাত, যারা ফ্যাসিস্ট তাদেরকে উৎসাহিত করে। সুতরাং এমন কোনো পরিস্থিতি আমাদের তৈরি করা উচিত হবে না যেটা ফ্যাসিস্ট বা পরাজিত শক্তিকে আরো নবউদ্যামে তাদের কর্মসূচি শুরু করে, আমাদের এই অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করে।
এমন ঘটনা জিইয়ে রাখা নির্বাচন বানচালের পরিকল্পনা হতে পারে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, নির্বাচন বানচালের পরিকল্পনা হতে পারে। যে কোন মহলের হয়তো ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। কারণ অনেকে তো ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়।
মোশাররফ হোসেন বলেন, এতদিনে এই যে আমাদের নির্বাচন, সংস্কার, বিচার- এই সকল বিষয়ে সংকট সমাধান হয়ে যেত বলে আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস। কিন্তু আমরা এমন কিছু দাবি দেওয়া উত্থাপন করেছি যা এর মধ্যে একটা ব্যাপক প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। যেমন আপনি বলবেন আমাদের এখন সেকেন্ড রিপাবলিক দরকার। আমাদের সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে দিতে হবে।
আমাদের রাষ্ট্রের মূলনীতি চেঞ্জ করে দিতে হবে। এগুলো আমাদের মধ্যে একটা বিভাজন তৈরি করেছে। সেই বিভাজনের সুযোগ নিচ্ছে ফ্যাসিস্ট সরকারটা। যার জন্য রাজনৈতিক যে শক্তিগুলি আছে, তাদেরকে অত্যন্ত দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। যদি আগামী কয়েকটা মাস তা না করি, তাহলে হয়তো বাংলাদেশ আরো চরম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে পারে।
পিএ/টিএ