সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেদিন ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশত্যাগ করেছেন, ওই দিন থেকেই আবারও ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি।
তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা যেদিন চলে গেছেন, সেদিন থেকে উনি চিন্তা করছেন কিভাবে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে পদচ্যুত করে সরানো যায়।
দেশের সব আমজনতা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সন্ধ্যার সময় বুঝতে পেরেছে, আওয়ামী লীগ ফিরে আসার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে।
গোলাম মাওলা রনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের ৩৫ শতাংশ ম্যানপাওয়ার-ভোটার যারা দেশের জিডিপির প্রায় ৬০ শতাংশ এখন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করে, তারাই তাদের বিপুল অর্থনৈতিক শক্তি এবং জনশক্তি নিয়ে এই সরকারকে এক মুহূর্ত শান্তিতে থাকতে দেবে না।
এমনকি আগামীতে যদি কোনো নির্বাচিত সরকার আসে, তাদেরও তারা শান্তিতে থাকতে দেবে না। এটা তো খুব সাধারণ ব্যাপার। এটা নিয়ে বলার মধ্যে ডক্টরেট ডিগ্রি লাগে না। এটা বলার জন্য একজন ড. ইউনূস হওয়া লাগে না।
এটা বলার জন্য নোবেলে শান্তি পুরস্কার পাওয়া লাগে না।
একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শোতে পতিত শক্তিগুলো গণ্ডগোল লাগিয়ে নির্বাচন ভণ্ডুল করার চেষ্টা করছে। জামায়াত আমির ও এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম বলেছেন— এ পরিস্থিতিতে কিসের নির্বাচন? এই দুটি জিনিসের মধ্যে কোনো সম্পর্ক খোঁজে পান কি না, এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, দুটি পরিস্থিতি আওয়ামী লীগ জীবন্ত রেখেছে।
তারা সরকারের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করার জন্য, বিএনপির সঙ্গে নেগোসিয়েশন করার জন্য, রাজনীতি করার জন্য, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য, একটা উইংস রেখেছে। আরেকটি হলো— যদি এদের উচ্ছেদ করা যায় শক্তি প্রয়োগ করে, চক্রান্ত করে। তারপর শেষে নানা রকম বিদ্রোহ সৃষ্টি করে ম্যাটিকুলাস ডিজাইনে নানা রকম ফন্দি-ফিকির করে যদি আবার এসে সেই পার্লামেন্ট, সেই ২৪-এর নির্বাচন, আবার সেই প্রধানমন্ত্রী। এই দাবিটা এখন পর্যন্ত তারা ছাড়েনি।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা কি কখনো বলেছে যে, আই এম স্যরি।
আমার এই কাজটা ভুল হয়েছে। তিনি এখন কী বলছেন? আমি এখন স্থির প্রধানমন্ত্রী। এই জিনিসগুলো তো উনি সেই প্রথম দিন থেকে বলে আসছেন। ওনার (ড. ইউনূস) বোঝা উচিত ছিল। যেটা আমাদের একজন সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে। এটা এত দিন পরে বলার কোনো মানেই হয় না।
রনি আরো বলেন, উনি (ইউনূস) যে কর্ম করেছেন এই এক বছরে। সেই কর্মের কারণে শেখ হাসিনাকে যে আমরা ভুলে যাব, তার কোনো কারণ নেই। উনি যদি এমন কিছু হতেন যে এখন আমাদের শেখ হাসিনাকে দেখলে মেজাজ গরম হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ জমানার কথা স্মরণ হলেই আমাদের এলার্জি চলে আসে।
এটা তো আমাদের হচ্ছে না; বরং পথে-ঘাটে-মাঠে প্রতিদিন যতবার ডক্টর ইউনূসের নাম হচ্ছে, এনসিপির নাম হচ্ছে, বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক দল একদিকে ইউনূসের পক্ষে বা বিপক্ষে আর ঠিক বিপরীতে শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ। সেটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এই আলোচনা-সমালোচনা আমরা বন্ধ করতে পারছি না। কেউ আশায় হচ্ছে, কেউ নিরাশা হচ্ছে, কেউ রাগ হচ্ছে, কেউ আতঙ্কগ্রস্ত হচ্ছে, কেউ ভয় পাচ্ছে, এই বুঝি এলো আওয়ামী লীগ।
এমআর/টিকে