প্রথমবারের মতো দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সম্পৃক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে বরাবরই অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি যেন রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে সরে না যায়, সেজন্য প্রথমবারের মতো কক্সবাজারে তিন দিনব্যাপী রোহিঙ্গা সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। তিনদিনের এই সম্মেলনের নানাবিধ সফলতাও রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সদ্য সমাপ্ত রোহিঙ্গা সম্মেলনের সফলতা সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বিভিন্নভাবে এ সম্মেলনের উপযোগিতা তুলে ধরেন।
আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, এই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে রোহিঙ্গারা সরাসরি কথা বলার সুযোগ পেয়েছে। এর আগে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন ফোরামে কথা হয়েছে। কিন্তু সেখানে কখনো রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব সেভাবে ছিল না। থাকলেও একেবারেই ভিন্নভাবে ছিল। এই প্রথমবারের মতো কক্সবাজারের অনুষ্ঠিত সম্মেলনে পৃথক একটি সেশনে রোহিঙ্গারা সরাসরি তাদের কথা বলতে পেরেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গাদের মুখ থেকে সরাসরি কথা শুনতে পেরেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শীর্ষ রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অতিথি হিসেবে অংশ নিয়েছেন। রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের জন্য সরকারের যে উদ্যোগ বা রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা অব্যাহত রাখতে সরকারের যে চেষ্টা সে চেষ্টাগুলোতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে এর আগে কখনো সম্পৃক্ত করা হয়নি। প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।
উপ-প্রেস সচিব বলেন, কয়েক মাস পরে জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচনের পর নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার দায়িত্ব নেবে। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতীয় যে নীতি বা চেষ্টা, সেই চেষ্টা নির্বাচিত সরকারকে অব্যাহত রাখতে হবে। যারা নির্বাচিত হয়ে আসুন, তারা এ বিষয়ে কী ধরনের পলিসি বা উদ্যোগ নেবেন তা তাদের জানানোর প্রয়োজন ছিল।
আবুল কালাম আজাদ মজুমদার আরও জানান, রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের ব্যাপারে মিয়ানমার ও চীন ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন ও আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। রোহিঙ্গা বিষয়ে আরও যে সম্মেলনগুলো হবে, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সম্মেলনের একটি বিশেষ সেশনে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আলোচনা হবে।
আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, কক্সবাজারের সম্মেলনটা ছিল জাতিসংঘ সম্মেলনের পূর্বপ্রস্তুতি। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সম্মেলনের তৃতীয় দিনে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিরা সরেজমিনে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। তারা দেখেছেন রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা কমে যাচ্ছে এবং কমে গেলে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।