চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিতে ফের বিক্ষোভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতাকর্মী এবং দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লালকার্ড প্রদর্শন কর্মসূচি পালন করে।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই ত্রিমুখী বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভে অংশ নেয়া শিক্ষার্থী ও নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থী ও সংগঠনগুলোর অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তারা বলেন, বারবার স্থানীয়দের হাতে শিক্ষার্থীরা হামলার শিকার হলেও প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। বরং আহতদের চিকিৎসা না দিয়ে প্রশাসনিক ভবনে নিয়োগ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, প্রশাসনের পদত্যাগ না হলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।
এর আগে, শনিবার বিকেলে প্রশাসনিক ভবনের নাম পরিবর্তন করে দেয়ালে ‘নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ লেখা হয়। ওই লেখার নিচে ছবি তুলতে গেলে দর্শন বিভাগের দুই নারী শিক্ষার্থীকে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার হুমকি দেন বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনাস্থলে তারা শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ডের ছবি তুলে পরিবারকে ডেকে “আপ্যায়নের” হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। এরই প্রতিবাদে দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা আজকের বিক্ষোভে অংশ নেন।
বিক্ষোভে ছাত্রদল নেতা জালাল সিদ্দিকী বলেন, “আমরা এই ব্যর্থ প্রশাসনের পদত্যাগ চাই। যারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, যারা নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে কটূক্তি করে এমন নারী বিদ্বেষী প্রশাসন আমরা চাই না। বিশ্ববিদ্যালয়ের তার প্রতিটি শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা দেওয়া প্রশাসনের দায়িত্ব এবং কর্তব্যের মধ্যে পরে কিন্তু তারা সেটা করতে পারছেনা, সেই ঘটনার দিন প্রশাসন নিয়োগ বোর্ড চালায়। তাই এই প্রশাসনের আমরা পদত্যাগ চাই।"
গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের আহ্বায়ক ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, আমরা গত তিন দিন ধরে সাত দফা দাবিতে কর্মসূচি দিয়ে আসছি তার মধ্যে অন্যতম একটি দাবি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে স্মারকলিপি প্রদান ও গণ স্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছি। সেখানে প্রায় হাজার খানের শিক্ষার্থী সাত দফা দাবির পক্ষে স্বাক্ষর করেছে। এর আগে প্রশাসন আমাদের জিজ্ঞেস করেছিল আপনাদের কোন সমর্থক আছে কিনা। আমরা আজকে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির মাধ্যমে তার প্রমাণ পেয়েছি। আমরা উপাচার্যকে জানিয়েছি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি প্রক্টোরিয়াল বডি পদত্যাগ না করে, তাহলে আমরা প্রক্টর অফিস ও প্রশাসনিক ভবন তালা ঝুলিয়ে দিব।
দর্শন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী হাসিব বলেন, আমাদের এক জুনিয়রের উপর হামলাকারী ব্যক্তিরা এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো কোন সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারেনি। এই ঘটনায় যারা দোষী তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে শাস্তির আওতায় আনতে হবে না হলে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দ্রুত সময়ের মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে।
টিকে/