প্রথম ওয়ানডেতে ৮ বল খেলা বিরাট কোহলি দ্বিতীয় ম্যাচে খেলেছেন ৪ বল। বলের সংখ্যার পরিবর্তন হলেও ডানহাতি ব্যাটারের নামের পাশের সংখ্যা বদলায়নি। টানা দুই ম্যাচেই ভারতের সাবেক অধিনায়ক আউট হয়েছেন শূন্য রানে। কয়েক মাস পর ওয়ানডে ক্রিকেটে টানা দুই ম্যাচে শূন্য রান করায় অনেকে কোহলির শেষ দেখে ফেলছেন। সুনীল গাভাস্কার অবশ্য কোহলিকে এখনই ৫০ ওভারের ক্রিকেট ছাড়তে দেখছেন না।
২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের পরই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন কোহলি। চলতি বছর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) সময় ছেড়েছেন টেস্ট ক্রিকেট। তবে ২০২৭ বিশ্বকাপ ভাবনায় এখনো ওয়ানডে খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। অস্ট্রেলিয়া সফরে যাওয়ার আগে সবশেষ ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ৫০ ওভারের ক্রিকেট ম্যাচ খেলেছেন তিনি।
কয়েক মাস পর ওয়ানডেতে ফিরে শুরুটা ভালো করতে পারেননি কোহলি। পার্থে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৮ বলে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন তিনি। মিচেল স্টার্কের অফ স্টাম্পের বাইরের ফুলার ডেলিভারিতে পয়েন্টে ক্যাচ দেন কুপার কনোলির হাতে। দ্বিতীয় ম্যাচেও রানের খাতা খুলতে পারেননি ৪ বল খেলে। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে কোহলির সবচেয়ে পছন্দের ভেন্যু অ্যাডিলেড।
ওয়ানডে কিংবা টেস্ট— দুই ফরম্যাটেই ওই ভেন্যুতে নিয়মিতই রান করেছেন তিনি। তবে দ্বিতীয় ওয়ানডে জাভিয়ের বার্টলেটের ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে লেগ বিফোর হয়েছিলেন কোহলি। ৩০৪ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম টানা দুই ম্যাচে শূন্য রানে আউট হয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। যদিও ভারতের পারফরম্যান্স নিয়ে সংশয় নেই গাভাস্কারের। টানা দুই ম্যাচে রানের খাতা খুলতে না পারলেও কোহলির পক্ষে ব্যাট ধরছেন ভারতের কিংবদন্তি সাবেক ব্যাটার।
এ প্রসঙ্গে গাভাস্কার বলেন, ‘দেখুন— সে ১৪ হাজারের বেশি রান, ৫২ ওয়ানডে সেঞ্চুরি এবং আমার মনে হয় ৩২টা টেস্ট সেঞ্চুরিও আছে। সে হাজার হাজার রান করেছে। সে দুই-একটা ম্যাচে ব্যর্থ হতেই পারে। কী হয়েছে সেটা নিয়ে খুব বেশি ভেবো না— এখনো অনেক খেলা বাকি আছে, সামনে অনেক খেলা আছে।’
‘হয়ত সিডনি তাঁর কাছ থেকে বড় একটা ইনিংস দেখতে পারবে। অবশ্যই, অস্ট্রেলিয়াতে অ্যাডিলেড তাঁর সবচেয়ে পছন্দের ভেন্যু। সেটা টেস্ট হোক কিংবা ওয়ানডে। সে এখানে সেঞ্চুরি করেছে। স্বাভাবিকভাবেই সবার প্রত্যাশা ছিল এখানে বড় রান করবে। কিন্তু সেটা হয়নি।’
মাস কয়েক আগে সৌরভ গাঙ্গুলি জানিয়েছিলেন, আগামী দেড় বছরে এত কম ম্যাচ খেলে রোহিত শর্মা ও কোহলির জন্য বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়া কঠিন। প্রথম ম্যাচে রোহিত ভালো করতে না পারলেও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। তবে এখনো ছন্দ খুঁজে পাননি কোহলি। প্রধান কোচ হিসেবে গৌতম গম্ভীর থাকায় কোহলি ও রোহিতকে বেশিরভাগ সময়ই সুযোগ দেবেন না। এমন গুঞ্জনও চড়াও আছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে।
২০২৭ সালে সাউথ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ায় হতে যাওয়া বিশ্বকাপকে কেন্দ্র এখন থেকেই তরুণ দল সাজানোর পথে হাঁটছেন গম্ভীর ও নির্বাচকরা। ওই ভাবনা থেকেই রোহিতকে সরিয়ে ওয়ানডে অধিনায়ক করা হয়েছে শুভমান গিলকে। বর্তমান সময়ে নিয়মিত পারফর্ম করতে না পারলে ওয়ানডে দল থেকে জায়গা হারাতে হতে পারে রোহিত ও কোহলি। গাভাস্কার অবশ্য মনে করেন, কোহলি এত সহজে হাল ছেড়ে দেয়ার মতো ক্রিকেটার না। গাভাস্কারের বিশ্বাস, ২০২৭ বিশ্বকাপ হবে কোহলি ও রোহিতের।
তিনি বলেন, ‘বিরাট কোহলি এমন খেলোয়াড় না যে সহজেই হাল ছেড়ে দেবে। আপনার কী সত্যিই মনে হয় ০,০ রান করার পর সে অবসর নেবে? অবশ্যই না। সে ভালোভাবে শেষ করতে চাইবে। এখনো সিডনি ম্যাচটা বাকি আছে। ঘরের মাঠে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজও আছে। এখনো অনেক ওয়ানডে বাকি আছে। আমি তো বলব ২০২৭ বিশ্বকাপ কোহলির হবে, সাথে রোহিত শর্মারও। এমনকি অস্ট্রেলিয়ানরাও হতাশ হবে যদি বিরাট কোহলিকে বড় স্কোর করতে না দেখে।’
আইকে/ টিকে