১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ঢালিউডের ক্ষণজন্মা অভিনেতা সালমান শাহের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার অকালমৃত্যু নিয়ে তৈরি হওয়া রহস্যের জট এবার হত্যা মামলার রূপ নিয়েছে। সেদিকেই তাকিয়ে আছে দেশবাসী।
এর আগে সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনায় পিবিআই বলেছিল, হত্যা নয়, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন। পিবিআই নিরপেক্ষ তদন্ত করেনি, দাবি করে ২০২১ সালে নারাজি দিয়েছিলেন সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী। এবার আদালত হত্যা মামলার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই হত্যা মামলায় তার স্ত্রী সামিরা, খল-অভিনেতা ডন, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জন আসামি এবং তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
সেই সূত্রেই আবারও সামনে এসেছে সালমানের মৃত্যুর দিন ঘিরে নানা অজানা তথ্য। এবার আলোচনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গকর্মী রমেশ, যিনি ময়নাতদন্তের সময় সালমানের মরদেহে ছুরি চালিয়েছিলেন। তবে রমেশ এখন আর রমেশ নেই; তিনি ধর্মান্তরিত হয়েছেন।
ইসলামধর্ম গ্রহণ করে এখন তার নাম হয়েছে, সেকান্দার। সম্প্রতি সেকান্দার এক সাক্ষাৎকারে সালমান শাহের মরদেহ ময়নাতদন্তের সেই দিনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে নিয়েছেন।
তখনকার সেই ভয়াবহ মুহূর্তের কথা স্মরণ করে সেকান্দার বলেন, আমার প্রিয় নায়কের বুকে আমি নিজেই ছুরি চালিয়েছিলাম। ফরেনসিক চিকিৎসকের নির্দেশে সব কিছুই করতে হয়েছিল আমাকে, কিন্তু কাটতে কাটতে বিশ্বাস হচ্ছিল না, সালমান মারা গেছেন।
সেকান্দার আরও বলেন, সালমান শাহর ভক্ত ছিলেন এ দেশের লাখো মানুষ। আমি নিজেও ছিলাম তাদের মধ্যে একজন। হঠাৎ শুনলাম সালমান শাহ মারা গেছেন, মরদেহ আসছে মর্গে।
তিনি বলেন, সেদিন হয়তো সরকারি ছুটি ছিল, শুক্রবার। মর্গের সামনে তখন হাজার হাজার মানুষের ভিড়। চোখে পানি নিয়ে সবাই অপেক্ষা করছেন, তাদের প্রিয় নায়কের শেষ দেখা পাওয়ার আশায়।
সেকান্দার বলেন, তখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গ এত আধুনিক ছিল না। পুরোনো মর্গেই মরদেহটি আনা হয়। চিকিৎসকের নির্দেশে ময়নাতদন্ত করি আমি। তিনি বলেন, লাশ কাটার সময় মনে হচ্ছিল, যেন নিজের প্রিয় মানুষকে আঘাত করছি।
অবসরে থাকা এই মর্গকর্মী বলেন, হাজার হাজার লাশ কাটার অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার। কিন্তু সালমানের লাশে হাত দেওয়ার সেই স্মৃতি আজও ভুলতে পারিনি।
এমআর/টিকে