বিশ্ববাজারে অস্থিরতা, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা ও অর্থনৈতিক নীতির টানাপোড়েন, সব মিলিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে স্বর্ণের বাজার ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। দীর্ঘদিন রেকর্ড দামে থাকার পর এক সপ্তাহে দুবাইয়ে স্বর্ণের দাম কমেছে চোখে পড়ার মতো। তবে এই পতনের মাঝেই বিশ্লেষকরা দিচ্ছেন নতুন বার্তা- বাজার হয়তো আবার ঘুরে দাঁড়াতে চলেছে মূল্যবান ধাতুটি।
মাত্র এক সপ্তাহে প্রতি গ্রামে প্রায় ৯ দিরহাম কমেছে স্বর্ণের দাম। শুক্রবার (২০ জুন) ২৪ ক্যারেট স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে ৪০৪ দিরহামে, ২২ ক্যারেট ৩৭৪ দিরহামে, ২১ ক্যারেট ৩৫৯ দিরহামে এবং ১৮ ক্যারেট ৩০৭ দিরহামে। খবর খালিজ টাইমসের।
বর্তমানে বিশ্ববাজারে স্পট গোল্ডের দাম প্রতি আউন্স ৩ হাজার ৩৫২ ডলার, যা আগের তুলনায় ০.৬ শতাংশ কম। প্লাটিনামের দামও সাম্প্রতিক উত্থানের পর আবার কিছুটা কমেছে।
মাসখানেক আগেও ধারণা করা হচ্ছিল ২২ ক্যারেট স্বর্ণ ৪০০ দিরহামের গণ্ডি ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। বাজার এখন কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি বড় ধসের ইঙ্গিতও হতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমানো নিয়ে এখনো স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে না। ফলে বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। কারণ সুদের হার বাড়লে স্বর্ণ বিনিয়োগের জন্য কম আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।
এদিকে ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের উত্তেজনা থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িত না হওয়ায় বিশ্ববাজারে স্বর্ণের চাহিদা তেমন বাড়েনি। ফলে দামও স্থবির রয়ে গেছে।
বিশ্বখ্যাত ফরেক্স ও সিএফডি ব্রোকার পেপারস্টোনের সিনিয়র গবেষক মাইকেল ব্রাউন জানান, ‘গত শুক্রবার স্বর্ণের দাম কিছুটা বেড়ে ৩৪০০ ডলার ছুঁয়েছিল। তবে ইসরায়েল-ইরান সংকটের বাস্তবতা ও মার্কিন অবস্থানের কারণে তা দ্রুতই নেমে আসে। তবুও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়ালে স্বর্ণের চাহিদা বাড়তে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদে স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ অনেক দেশ এখন রিজার্ভে ডলারের বিকল্প খুঁজছে এবং স্বর্ণকে সুরক্ষিত সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করছে।’
বিশ্লেষকদের পরামর্শ, স্বল্পমেয়াদি পতনের মাঝেও স্বর্ণবাজারে থাকতে পারে দীর্ঘমেয়াদি উত্থানের সম্ভাবনা।
আরআর