গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন ও কারা এই সরকারের প্রধান হবেন সেই ইস্যুতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী একমত হয়ে যাওয়ার কারণে অন্য দলের নতুন প্রস্তাব চাপা পড়ে গেছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দাফের ১৭তম দিনের আলোচনার বিরতিতে এসব কথা বলেন তিনি।
রুবেল বলেন, বিগত কিছুদিন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে একটা প্রস্তাব এসেছিল বিচার বিভাগকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান আকারে না রাখা। এখানে যুক্তি ছিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচার বিভাগ থেকে রাখা হলে তখন বিচার বিভাগ দলীয় করণের ঘটনা ঘটতে পারে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, তত্ত্বাবধায়কে রাষ্ট্রপতিকে রাখা হলে কি হয় সেটা আমরা অতীতে দেখেছি, ১/১১ সরকারের আবির্ভাব ঘটেছে। ফলে বিগত দিনে এখানে একটা ঐকমত্যের জায়গা এসেছিল যে, বিএনপি বিচার বিভাগ না রাখার বিষয়ে ঐকমত্য করেছিল এবং জামায়াত রাষ্ট্রপতিকে না রাখার কথা বলেছিল।
তিনি আরও বলেন, এরপর এসব আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যখন নতুন প্রস্তাব এলো তখন আমরা দেখলাম বিএনপি একটা নতুন প্রস্তাব নিয়ে এসেছে, সেখানে বিচার বিভাগকে রাখার যে ত্রয়োদশ সংশোধনী ছিল সেটাতে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাবটা বিবেচনায় রাখা হয়েছে। যার ফলে এখন দেখা যাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত একমত হয়ে গেছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার কীভাবে হবে, কারা প্রধান হবেন– এ বিষয়ে বিএনপির ও জামায়াত একমত হয়ে গেছে উল্লেখ করে গণসংহতির এ নেতা বলেন, ফলে আমরা যারা নতুন একটা ব্যবস্থা চাইছি, তাদের প্রস্তাবগুলো চাপা পড়ে যাচ্ছে। তবে, আমাদের প্রস্তাবগুলো সামনে নিয়ে আসার জন্য আবারও আলোচনায় তুলব। কারণ আমরা ইতোপূর্বে দেখেছি যে, তত্ত্বাবধায়কে বিচার বিভাগকে রাখলে বিচার বিভাগ দলীয়করণ হয়। আর রাষ্ট্রপতি দলীয় ব্যক্তি হওয়ার কারণে কি হয় সেটাও দেখেছেন। তাই এই দুইটাকে বাদ রেখে কীভাবে … কথা বলেছি। আর সমস্ত পদ্ধতি যদি ব্যর্থ হয় তখন শুধু সাবেক প্রধান বিচারপতির অপশন না রেখে বিচার বিভাগের অন্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের রেখে একটা প্যানেল করা যেতে পারে, এটা হবে একেবারে শেষ অপশন।
আবুল হাসান রুবেল জানান, কমিশনের প্রস্তাব ছিল, প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা এবং দলীয় প্রধান এক ব্যক্তি হতে পারবেন না। এক্ষেত্রে অধিকাংশ দল একমত হয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান একজন হতে পারবেন না। তবে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা একজন হতে পারবেন। তাই এখানে যাদের ভিন্ন মত আছে, তারা সেই ভিন্নমত রেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
‘এই প্রস্তাবে গণসংহতি আন্দোলন এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান থাকার বিপক্ষে বলেছি। তবে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী এক ব্যক্তি থাকতে পারেন।’
এসএন