ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান সিরিজজুড়ে আম্পায়ারদের ওপর একাধিকবার ক্ষিপ্ত হতে দেখা গেছে ভারতীয় ক্রিকেটারদের। এমনকি লর্ডস টেস্টে হারের পর আম্পায়ারের বিরুদ্ধে তারা পক্ষপাতিত্বেরও অভিযোগ এনেছে। এবার সিরিজ নির্ধারণী ওভাল টেস্টেও অভিজ্ঞ আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনার সঙ্গে বিবাদে জড়ালেন লোকেশ রাহুল। এ ছাড়া বেন ডাকেটকে আউট করার পর নিয়ম লঙ্ঘন করে তার কাঁধে হাত রেখেছেন ভারতীয় পেসার আকাশ দ্বীপ।
লন্ডনের দ্য ওভালে চলছে ভারত ও ইংল্যান্ডের পঞ্চম ও শেষ টেস্ট। দ্বিতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৭৫ রান, তবে প্রথম ইনিংসে ২৩ রানে পিছিয়ে থাকায় এখন শুভমান গিলদের পুঁজি ৫২ রানের। গতকাল খেলার মাঝে ম্যাচের উত্তেজনা বাড়িয়েছে দুই দলের খেলোয়াড়দের মুখোমুখি অবস্থান ও ক্ষেত্রবিশেষে আম্পায়ারের সঙ্গে বিবাদে জড়ানোর মুহূর্ত।
ইংল্যান্ডের ইনিংসের ২২তম ওভারে প্রসিধ কৃষ্ণের একটা বল অভিজ্ঞ ইংলিশ ব্যাটার জো রুটের ব্যাট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। তা দেখে ভারতীয় পেসার কিছু একটা বলেন রুটকে। পরের বলেই রুট জবাব দেন পয়েন্ট অঞ্চল দিয়ে চার মেরে। এরপর তিনি কিছুটা হেঁটে প্রসিধের কাছে পাল্টা কিছু বলেন। ওই সময় তাকে যথেষ্ট উত্তেজিত দেখাচ্ছিল। যদিও সাধারণত এভাবে মেজাজ হারান না রুট। ফলে প্রসিধ-রুটের মাঝে কিছুক্ষণ কথা চালাচালি হয়েছে। ওই সময় আম্পায়ার ধর্মসেনা হস্তক্ষেপ করতে চাইলে, বাদানুবাদ স্থানান্তরিত হয় রাহুল-ধর্মসেনার মাঝে।
রাহুল প্রথমে আম্পায়ারের উদ্দেশে বলেন– আপনি কী চান, আমরা চুপ করে থাকি? তখন ধর্মসেনা পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে জিজ্ঞেস করেন– আপনি কি চাইবেন কোনো বোলার আপনার দিকে তেড়ে গিয়ে কথা বলবে? না, এটা করা যায় না। না রাহুল, আমরা এটা হতে দিতে পারি না। এরপর রাহুল আগবাড়িয়ে বলতে থাকেন– আমরা কি শুধু ব্যাট আর বল করে বাড়ি ফিরে যাব? পরে এই শ্রীলঙ্কান আম্পায়ার বিষয়টি নিয়ে ম্যাচের পর আলোচনা করার কথা বলেন।
এদিকে, ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার বেন ডাকেট ও জ্যাক ক্রাউলির ৯২ রান জুটিতে সফরকারীদের হতাশা উপহার দিচ্ছিল। ১৩তম ওভারে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত ব্রেকথ্রু পায় ভারত। আকাশ দ্বীপের বলে রিভার্স স্কুপ করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক ধ্রুব জুরেলের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ডাকেট। এরপর পেছন থেকে গিয়ে ৪৩ রানে আউট হওয়া এই ইংলিশ ব্যাটারের কাঁধে হাত রেখে কিছু বলতে থাকেন আকাশ। আইসিসির কোড অব কন্ডাক্টের কথা মাথায় রেখে রাহুল এগিয়ে এসে তাকে সরিয়ে নেন।
কোড অব কন্ডাক্টের ২.১২ অনুচ্ছেদে আন্তর্জাতিক ম্যাচ চলাকালে অনুপযুক্ত শারীরিক সংযোগে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সীমা অতিক্রম করে কোনো খেলোয়াড় ইচ্ছাকৃত, বেপরোয়া কিংবা অবহেলার ভঙ্গিতে হেঁটে কিংবা দৌড়ে যাওয়া, এরপর খেলোয়াড় কিংবা আম্পায়ারের কাঁধে হাত রাখার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। তবে আরও গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়কে জোর পূর্বক প্রতিক্রিয়া দেখাতে বাধ্য করা, ইনজুরিতে পড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি, বেপরোয়া আচরণের মতো ঘটনা ঘটলে। যদিও ডাকেট ঠাণ্ডা মাথায় এবং প্রতিক্রিয়া ছাড়াই মাঠ ছেড়েছেন।
পিএ/টিএ